IMG 20250203 WA0005

পুনর্বাসন, সহায়তায় ঋণগ্রস্ত নিঃস্ব কৃষকরে আকুতি

নিজস্ব প্রতিবেদক ; কিশোরগঞ্জ ইটনা থানাধীন আগুনে পুড়ে সব কিছু ছাই, বেঁচে থাকার স্বপ্ন অশ্চিত। সবকিছু হারিয়ে বাঁচা মরা যেন সমান। নিঃস্ব সর্বহারা ঋণগ্রস্ত কৃষক পরিবারের হার্তনাদ আহাজারি আকুতি। পুনর্বাসন, সহায়তায় নিঃস্ব কৃষকরে বিনীত আর্জি শত মিনতি। কৃষকের সারা জীবনের আয় জমা পুঁজি-রুজি সবকিছু হারিয়ে অপূরণীয় ক্ষতিগ্রস্তে দিকবিদিক হারিয়ে হতাশা দিশাহারা। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ভয়ে আতঙ্কে নিরাপত্তাহীনতায় ভুক্তভোগী ক্ষতিগ্রস্তরা প্রতিবেশী ও এলাকাবাসী। ক্ষতিগ্রস্তের সহায়তা পুনর্বাসনে আর্থিক অনুদানের আকুল আবেদন।

৩০ জনুয়ারি (বৃহস্পতিবার) রাত সাড়ে ৯টায় ইটনা থানাধীন ১িনং রায়টুটি ইউনিয়ন,৩ নম্বর ওয়ার্ড, কানলা গ্রামের মেন্না পূর্বপাড়াস্থ মো.আলাদ মিয়া নামে এক কৃষকের ঘরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মো.আলাদ মিয়া ও স্ত্রী’সহ দুই ছেলে দুই মেয়েসহ তার নাতি-নাতনী সহ ৭ সদস্যের পরিবার। এখন পরিবারের সকলেই খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছে। রাতের প্রচন্ড শীতে অন্যের বাড়িতে আশ্রয়ে নিয়ে কোন রকমের দিনপাত করে জীবন যাপন করছে।

অগ্নিকাণ্ডে বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আকষ্মিক বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের ফলে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত একটি ঘরের আশপাশের ঘরেও আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এমন ভয়াবহ বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের বিস্ফোরক অগ্নিকাণ্ডে অবাক ও আতঙ্কিত এলাকাবাসী। ইতোপূর্বে এলাকায় আর কখনো কোন ভাবে কোনদিন এমন ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেনি। ক্ষতিগ্রস্তের আর্থিক ক্ষতিপূরণ অনুদান সাহায্য সহায়তার দাবি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক পরিবার ও এলাকাবাসীর।

আগুন নিয়ন্ত্রণে দায়িত্বশীল গ্রামবাসীরা বলেন,হাওর বৈরী এলাকার সংকীর্ণ রাস্তা ব্যাকওয়ার্ড প্রত্যন্ত দুর্গম যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিচ্ছিন্ন হাওর এলাকা দরুণ ফায়ার সার্ভিস কে যথাসময়ে অবগত না করায় সময়মতো পৌঁছাতে পারেনি। একমাত্র আল্লাহর উপর ভরসা করে স্থানীয়দের সহায়তায় ১ঘন্টার ভিতর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। দীর্ঘ ৩ ঘণ্টায় আগুন নিভানোর সব রকমের প্রচেষ্টা ও পরিশ্রমে অক্লান্ত সক্রিয়তায় আগুন পুরাপুরি নিভাতে সক্ষম হয়। রাত ১২টায় আগুন থেকে নিরাপদ হয় প্রতিবেশী ও গ্রামবাসী।

জানা যায়, ঘরে আগুন লাগা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক তালা দিয়ে নামাজ পড়ার সময় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে বৈদ্যুতিক শর্ট-সার্কিট থেকে। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটে আগুন ধরে কিছু বুঝে ওঠার আগেই চোখের পলকেই সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরো জানায়,আগুনের সূত্রপাত বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে হয়েছে। বৈদ্যুতিক মিটার পুড়ে ছাই হওয়া সহ মিটার সংযোগের খামবার লাইনের তার অর্ধেক পুড়ে যায়।

ভাগ্যক্রমে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও তার পরিবার প্রাণে বেঁচে যায়। ঘরে কেউ না থাকাতে তার পরিবারও প্রাণে বেঁচে যায়। আশপাশ প্রতিবেশী এলাকাবাসী এবং সকলের প্রাণের ঝুঁকি সত্বেও ইঞ্জিল ডিজেল চালিত পানির মেশিনের সহায়তায় আগুন নিভাতে সক্ষম হয়। ফায়ার সার্ভিস আসাতে দেরি হওয়ায় এলাকাবাসীদের সকলের সহযোগিতায় দীর্ঘ ৩ ঘণ্টা ধরে আগুন জ্বললেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।

ফায়ার সার্ভিস আসতে দেরি হওয়ায় এলাকাবাসীর অগ্নিযুদ্ধে ঘনবসতি গ্রামটি শেষ রক্ষা পায়। বেঁচে যায় গ্রামবাসী অপূরণীয় জানমাল প্রাণহানিসহ আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে।

তাড়াইল ফায়ার স্টেশন ইনচার্জ আতিকুল আলম বলেন,ঘটনাস্থল থেকে আমাদের মেসেজ করে,খবর পাওয়ার ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই গন্তব্য স্পটের উদ্দেশ্যে আমরা রওনা হই। যাত্রাপথে রাত ১০টায় তাড়াইল সেকান্দর নগর যাওয়া মাত্রই আমাদেরকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে বলে অবগত করলে আমরা আর স্পটে না গিয়ে ফেরত আসি। প্রয়োজনীয়তা জানালে আমরা অবশ্যই স্পটে যেতাম।

ইটনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) আবু বকর সিদ্দিক’কে উক্ত বিষয়ে অবগত করলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান।

তবে,ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক যদি লিখিত আবেদন দেয় তখন টিআর কাবিখায় যখন বরাদ্দ আসে তখন আমরা তাকে বরাদ্দ দিতে পারবো। জরুরী ভাবে কোন বরাদ্দ নগদ উপকৃত করার মতো সাহায্য করার মতো আমাদের কোন উৎস উপকরণ থাকে না।

কৃষকের ক্ষতিগ্রস্তের বিষয়ে তিনি নগদ কার্যকরী কোন ব্যবস্থা করতে পারবেন না বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন। তবে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় পিআইও কর্মকর্তা অফিস আছে। সেখানে আবেদনের প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে তাকে পুনর্বাসনে সরকারি টিআর কাবিখায় আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে বলে জানান। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে বিকল্প নগদ আর্থিক সহায়তায় তিনি ডিসি স্যারের কাছে সরাসরি আবেদন করতে পারেন। আবেদনের ভিত্তিতে পরিস্থিতিতে যত সম্ভব দ্রুত বা পরবর্তীতে সাহায্য সহায়তা পেতে পারেন।

জরুরী নগদ সহায়তায় ডিসি মহোদয়ের কাছে অনেক উৎস আছে। প্রয়োজন পরিস্থিতিতে তিনি তাকে তার সাধ্যের দায়িত্বের ভিতরে যতটুকু সম্ভব সহায়ত পেতে পারেন।

জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাথে সরাসরি দেখা করে সাক্ষাতে কথা বলেন।সরকারিভাবে যদি কোন সাহায্য সহযোগীতা থাকে তাহলে পেতে পারে। বিদ্যুৎ পিষ্ট, আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত সরকারি ফি চিকিৎস্যা পেতে পারে। আর্থিক নগদ এ ধরনের কোন সরাসরি বরাদ্দ থাকে না। ক্ষতিগ্রস্ত অনাকে আমার বরাবর আবেদন করতে হবে। আমাকে সরাসরি দেখতে হবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ। আমরা অবশ্যই দেখবো (ইউএনও) আমাকে জানাবে। আবেদন করুক।

উল্লেখ্য: ঋণগ্রস্ত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক পরিবারের চোখের পলকেই সব নিঃস্ব সর্বহারা হয়ে যাওয়ায় পরিবারের আর্তনাদ আহাজারীতে আকাশ বাতাস যেন ভারি করে তুলে। মানবিক সহায়তায় নিঃস্ব ক্ষতিগ্রস্তের পাশে দাঁড়ানোর দাবি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক পরিবার ও এলাকাবাসীর। সরকারের নীতিনির্ধারক যথাযথ কর্তৃপক্ষে দ্রুত পদক্ষেপ দৃঢ় আশাবাদী। সেইসাথে মানবিক সংগঠন,দানবীর,স্বচ্ছ অর্থবিত্ত, বৃত্তশালীদের সুদৃষ্টি সহায়তা আর্থিক অনুদানের বিনীত আবেদন আকুল আর্জি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক পরিবার ও এলাকাবাসীর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *