FB IMG 1733947409502

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২৮ ছাত্র সংগঠনের মতবিনিময় ও দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রত্যয় নিয়ে ছাত্রদল এই সভার আয়োজন করে।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ২৮টি রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের নেতাদের মধ্যে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে এতে ডাক পায়নি ইসলামি ছাত্র শিবির ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। উক্ত সভায় ছাত্র সংগঠনগুলো দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা রাখায় প্রত্যয় ব্যক্ত করে।

আজ বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিকালে রাজধানীর কাঁটাবনের একটি রেস্তোরাঁয় দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ছাত্র নেতারা বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব, অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গণতান্ত্রিক পরিবেশ, ছাত্র সংসদ নির্বাচন, অভ্যুত্থানের প্ল্যাটফর্ম ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ভূমিকাসহ সমসাময়িক গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।

এ মতবিনিময় সভায় ছাত্র নেতারা বলেন, “ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশ থেকে পালিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘ ১৫ বছর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। গণ-অভ্যুত্থানে দুই হাজারের বেশি মানুষ শহীদ ও ৩০ হাজারের অধিক মানুষ আহত হয়েছে। ভারত রাজনৈতিকভাবে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে সর্বতোভাবে চেষ্টা করেছে। কিন্তু তাতে ব্যর্থ হয়ে এখন নানা ধরণের উসকানি দেওয়ার চেষ্টা করছে। আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা তারই প্রকাশ বলে আমরা মনে করি। ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী দূতাবাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারত ব্যর্থ হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

উপস্থিত ছাত্রনেতারা আরও বলেন, আমরা দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ঘোষণা করছি, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত এলে এদেশের ছাত্র-জনতা জীবন দিয়ে হলেও মোকাবিলা করবে।”

মতবিনিময় সভায় ছাত্র নেতারা জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যার বিচার, আহতদের সুচিকিৎসা, নিহতদের পরিবারের পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে- দাবি জানিয়ে বলেন, দেশে সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক যেকোনও পদক্ষেপ ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করা হবে। একইসাথে, দখলদারত্বমুক্ত নিরাপদ ক্যাম্পাস, শিক্ষার্থীদের গণতন্ত্র ও সংগঠনের অধিকার চর্চার পরিবেশ নিশ্চিত করতে ও ছাত্র রাজনীতি বন্ধের অপতৎপরতার বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তুলবো। সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর গণতান্ত্রিক সংস্কারের লক্ষ্যে (১৯৭৩ সালের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ ও ছাত্র সংসদের গঠনতন্ত্রের সংস্কার শেষে) সংস্কার কমিশন গঠন করে সংস্কার শেষে দ্রুত ছাত্র সংসদ নির্বাচন দিতে হবে।”

গণ-অভ্যুত্থানের প্ল্যাটফর্ম ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ভূমিকার সমালোচনা করে নেতারা বলেন, “অভ্যুত্থানের পর থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্র সংগঠনগুলোকে অপরায়নের দিকে ঠেলে দিয়েছেন। অভ্যুত্থানে হাজারো জনতার রক্তের উপরে যে জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছিল গোষ্ঠীগত স্বার্থ উদ্ধারে ব্যবহারের কারণে তা ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। আমরা মনে করি, অভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে গড়ে ওঠা এই জাতীয় ঐক্যে যদি ভাঙনের সৃষ্টি হয় তার দায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা কোনভাবেই অস্বীকার করতে পারবে না।”

এ সভায় উপস্থিত থাকা ছাত্র সংগঠনগুলো হলোঃ- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্র আন্দোলন (এনডিএম), বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (জেএসডি), জাতীয় ছাত্র সমাজ (জাফর), জাগপা ছাত্রলীগ (প্রধান), বাংলাদেশ ছাত্র মিশন, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ভাসানী ছাত্র পরিষদ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (বিসিএল), নাগরিক ছাত্র ঐক্য, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, বাংলাদেশ জাতীয় ছাত্র সমাজ (পার্থ), ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্র মজলিস, বাংলাদেশ ছাত্রপক্ষ, রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ মুসলিম ছাত্রলীগ (নুর আলম), সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিস, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলন, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, ইসলামি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্র সমাজ, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *