FB IMG 1732702136797

মেহেদী হাসান : গত এক বছরে নসিমন, করিমন, অটোরিকশাসহ মহাসড়কে চলাচলকারী ছোট ছোট নিষিদ্ধ যানবাহন থেকেই হাতিয়ে নেন অন্তত তিন কোটি টাকা! কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের মিরপুর হাইওয়ে ফাঁড়ির ওসি মনজুরুল আবছার সম্পর্কে এছাড়াও মিলেছে অগণিত অভিযোগ। আওয়ামী সরকারের দাপুটে মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ভাগিনা বলে বহুল আলোচিত এই ওসির ক্ষমতার উৎস কি তা জানতে চায় ভুক্তভোগী আমজনতা।

উল্লেখ্য যে গত ২৮ অক্টোবর ২০২৪ইং দৈনিক যুগান্তর, দৈনিক রূপসী বাংলাসহ বেশ কয়েকটি পত্রিকায় কুমিল্লা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির এই ইনচার্জের আকাশচুম্বী দুর্নীতির অভিযোগ একাধারে তুলে ধরে কিন্তু এবিষয়ে তার বক্তব্য, ‘চাঁদার টাকা পেয়েও ওইসব নিউজ প্রকাশ করেছে সাংবাদিকরা। সাংবাদিকদের চাঁদাবাজির প্রমাণ সিডিতে সংগ্ৰহ করা আছে’।

এছাড়াও ওবায়দুল কাদেরের ভাগ্নে পরিচয়ে দাপিয়ে বেড়ানো মনজুরুল আবছারের মতে, ‘সাংবাদিকরা চাঁদাবাজি করেও ক্ষান্ত হয়নি’, কিন্তু তার এসব বক্তব্যের উপর পূর্ণ আস্থা স্থাপন না করতে পারার কারণে এই প্রতিবেদনের প্রতিবেদক দল তার কাছে বারংবার যখন সেইসব তথ্য প্রমাণ চায় নিউজ প্রকাশের নিমিত্তে তখন তিনি রহস্যজনক কারণে পিছপা হতে থাকেন। এছাড়াও এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন যে সাংবাদিকরা তার কাছে ভিডিও কলের মাধ্যমেও চাঁদাবাজি করে থাকেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, এই দাপুটে পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম অনেক দিন ধরেই নিউজ প্রকাশ করে যাচ্ছে কিন্তু তার অন্ধকারের হাত এতোটাই শক্তিশালী যে এখন পর্যন্ত এই পুলিশ লীগের দাপুটে সদস্যকে কেউ হিলাতে পারে নি একচুলও! তিনি জানান, তিনি প্রতিদিন প্রায় ৫০/৬০ জন সাংবাদিকদের চাঁদা দিয়ে বিদায় করেন!

এমতাবস্থায় প্রতিবেদক তাকে প্রশ্ন করেন, “এতো টাকার উৎস কি?” তিনি এ প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান।

এখানে একটি কথা উল্লেখ্য না করলেই নয় যে পরিবহন সেক্টরে একটি কথা প্রচলিত আছে, ‘পরিবহন শ্রমিকদের চাকা ঘুরলেই টাকা আর হাইওয়ে পুলিশের সেই চাকা থামালেই টাকা!’ আর
এক্ষেত্রে ‘মিরপুর হাইওয়ে ফাঁড়ি, কুমিল্লা’ একটি অন্যতম চাঁদা আদায়ের কুখ্যাত হাইওয়ে চেকপোস্ট বলে সকলের কাছে কুখ্যাত।

গত অক্টোবরে দৈনিক যুগান্তর, দৈনিক রূপসী বাংলা, অপরাধ বিচিত্রাসহ বেশ কয়েকটি দৈনিক পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, “কুমিল্লা মিরপুর হাইওয়ে ফাঁড়ি‌ ‘নিষিদ্ধ যানবাহন নসিমন-করিমন’ থেকেই ওসির আয় কোটি‌ টাকা”। জানা যায় কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের উক্ত হাইওয়ে ফাঁড়ির আওয়ামী ঘরানার ওসি মনজুরুল আবছার গত এক বছরে নসিমন, করিমন, অটোরিকশাসহ মহাসড়কে চলাচল করে সবধরনের যানবাহন থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন কোটি কোটি টাকা এবং স্থানীয়ভাবে কোনোরকম জোড়াতালি দিয়ে তৈরি করা নিষিদ্ধ যানবাহনগুলো থেকেই তার মাসিক ভিত্তিতে কয়েক কোটি টাকা আদায় হয়।

এবিষয়ে সুত্র জানায়, কোনো চালক যদি ঘটনাক্রমে তার চাঁদার টাকা দিতে দেরী বা গড়িমসি করে তবে তার গাড়ি আটকে রাখা হয়। এছাড়াও জানা যায়, তার আগে এই ফাঁড়িতে কোনো ওসি এসে সাধারণত ৩ মাসের বেশি সময় অবস্থান করতে না পারলেও অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ভাগিনা বলে খ্যাত ওসি মনজুরুল গত ১ বছরের বেশি সময় ধরে এখানে দাপটের সঙ্গে টিকে আছেন। উল্লেখ্য যে এছাড়াও এই অঞ্চলটিতে চোরাকারবারিদের বিচরণও অনেক বেশী বলে জানা যায় স্থানীয় লোকজনদের কাছ থেকে। তারা জানান, ওসি সাহেবের তাদের কাছ থেকেও নিয়মিত মাসোহারা হিসেবে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় হয়ে থাকে।

এছাড়াও নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে যাওয়ায় তাকে নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে এলাকায় জোর সমালোচনা চলছে কিন্তু তার বিরুদ্ধে যতোই অভিযোগ করা হোক না কেন তাতে তার কিছু যায় আসে না। জানা যায়, তিনি এই বিশাল অঙ্কের টাকার মাসোহারা আদায় ও তার হিসাবনিকাশ রাখার জন্য বেশ কয়েকজনকে নিয়োগ দিয়ে রেখেছেন ক্যাশিয়ার পদ তৈরি করে। ওসি মনজুরুল আফছারের সেইসব লোকজন ও চাঁদাবাজির প্রকৃয়া নিয়ে ২য় পর্বে আসছে বিস্তারিত প্রতিবেদন, জানতে আমাদের সাথেই থাকুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *