FB IMG 1726942872692

হঠাৎ করেই শিক্ষিতদের নিজেদের হাতে মানুষ মারার বিভৎসতম পদ্ধতি দেখে হতভম্ব হয়ে গেছি! ওরা আসলে কারা!? গুরু কে?

রাজধানী ঢাকার দুটি সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের দুটি ক্যাম্পাসের দুই দল শিক্ষার্থীদের হাতে গতকাল একই দিনে দুটি বিভৎসতম পদ্ধতিতে দুজন মানুষ মারা হয়েছে! যা দেখে প্রশ্ন উঠেছে, “এদেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে কি কোনো প্রেতাত্মার মতো বদ আত্মিক শক্তি ঢুকে গেছে!? তাই কি তারা বাংলাদেশের মাটিতে বিভৎস থেকে বিভৎসতর খুনের শো-টাইম শুরু করে দিয়েছে!?

লক্ষ্য করে দেখুন, এটা কোন স্বাভাবিক মানুষের পক্ষে অসম্ভব। একদল মানুষ হঠাৎ করে আত্মিক ভাবে রীতিমতো ভ্যাম্পায়ার/ডিমন্স হয়ে গেলেই হয়তো সুন্দর পরিপাটি মানুষ সেজে মানুষের মধ্যেই ভালো মানুষের রূপে ঘুরে-ফিরে সময় মতো এমন বিভৎস ঘটনার জন্ম দিয়ে আবার চুপচুপ পুনরায় ভালো মানুষের ছদ্মবেশে ফিরে যেতে পারে।

আমার তো মনে হয় হঠাৎ করেই বাংলাদেশে যেনো লেটেস্ট একটা “ইংরেজি হরর মুভি” বাস্তবে চালু হয়ে গেছে!

লক্ষ্য করা গেছে, কয়েকমাস যাবৎ এই দেশে প্রতিদিনই বিভৎস থেকে বিভৎসতর ভাবে মানুষ মারা হচ্ছে! ব্যাটম্যান মুভির জোকারের চেয়েও অবিশ্বাস্য শান্ত মস্তিষ্কে দেশের একটার পর একটা সম্পদ ধ্বংস করা হচ্ছে, প্রকাশ্যে! যা সাধারণত মানুষের ঘামের পয়সায় গড়া! দেখে মনে হয় ওদের উপর এমন‌ই একটা বদ-আছর জানি পরেছে যে যার ফলে ওদেরকে মানুষ দেখলেই চিনে ফেলে এবং চুপ হয়ে সম্বিত হারা হয়ে যায় আর ওরা তখন সবার চোখের সামনে সব ধ্বংস করে, হত্যা করে হাসতে হাসতে চলে যায়! মানুষরা যেনো ওরা চলে যাবার পরে সম্বিত ফিরে পায়! ঘুম ভেঙ্গে গেলে যেমন স্বপ্ন ভুলে যায় তেমনি সবাই সবকিছু ভুলে যায়! নয়তো তারা কিছুতেই রক্ষা পেয়ে স্বাভাবিক মানুষের মতো হয়ে চলতে পারতো না! অবশ্যই ধরা পরে যেতো মানুষের জালে!

এখানে কোনো ভিনজাতি বা এলিয়েন আসে নাই! এই দেশের ও এই জাতির‌ই মানুষ সবাই! যার যার জায়গায় থেকেই করছে! এমন‌ও কিছু নয় যে এই দেশে ব্রিটিশ বেনিয়া বা পাকিস্তানী হায়েনাদের উৎপাত ফিরে এসেছে!
….হয়তো আছে! শারীরিক না হোক মানসিক ভাবে! নয়তো কি করে সম্ভব?

গতকালের দুটি ক্যাম্পাসের দুটি হত্যাই যেভাবে তিলে করা হয়েছে তা দেখার পরে থমকে গেছি! মনে প্রশ্ন জেগেছে! ওরা আসলে কারা? কারা ওদের বাবা-মা? কারা তাদের সন্তানদের লেখাপড়া করতে এই শহরে পাঠিয়েছেন? এতো দূর টেনে এনে সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে পাঠিয়েছেন? কেনো পাঠিয়েছেন? তাদের কার সন্তান আসলে কে কি? কে কি করছে তা পৃথিবীর কেউ না জানলেও তো তাদের জানার কথা! তাহলে তারা কি করেন!? রহস্যময়….

এসব কথা ভেবে আমার খুব দেখতে ইচ্ছা হয়েছে ওদের মতো সন্তানদের যে বাবা মায়েরা জন্ম দিয়েছেন তাদেরকে। আমার মনে হোলো মানুষের মতো মানুষ হতে ছেলেমেয়েদের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে পাঠিয়ে তারা জানি কোনো জঘন্য পাপ করেছে ফেলেছেন! অবশ্যই! নয়তো…

ওরা সুশিক্ষিত হতে এসে এমনই কুশিক্ষিত হয়েছে যে ওরা এখন আর কোনো সমাজ মানে না, ধর্মকে মানে না, নিজের মতো করে নিয়ে ধর্ম বানিয়ে বিশ্বাসীদের মতো সুলুম লাগিয়ে মানুষের সাথে বেঈমানি করে চলেছে!

ওদের লাজ, লজ্জা, হায়া বলতে জানি কিছু নেই! ওদের ইনসানিয়াত, আখলাক, মনুষ্যত্ব বোধ বলতে যেনো কিছু নেই, ওরা কাউরে পরোয়া করে না হঠাৎ উদয় হয়েছে ওরা, ওরা কোনো বয়োজ্যেষ্ঠ বা মুরুব্বি মানে না! তার মানে ওরা নিশ্চ‌ই ইবলিশ শয়তানকেই ওদের মুরুব্বি বানিয়েছে! নয়তো যে কায়দায় সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থীরা খুন করে দেখালো, ওভাবে তো কোন স্বাভাবিক মানুষ কোন মানুষকে খুন করতে পারে না!? রাক্ষস খোক্ষসদের মধ্যেও খুব নোংরা শ্রেণীর যারা তারা অতোটা মারাত্মক হতে পারে হয়তো!

দেখা গেছে, বনের বাঘ হরিণ শিকার করে একেবারে মেরে ফেলে না। বাঘ শিকার করে বিশেষ করে ঘাড় মটকে জ্যান্ত অবস্থাতেই খেতে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায়! তারপর নিজের ঘোপে গিয়ে বাঘ সেই ঘাড় মটকে পরে থাকা জ্যান্ত হরিণটার রানের অংশ থেকে খাওয়া শুরু করে! বেচারী হরিণ চাইলেও তখন মরতে পারে না! একটু একটু করে বাঘ হরিণটা যতোক্ষণ জ্যান্ত থাকে ততক্ষণ খায়! খেতে খেতে যখন টের পায় হরিণের রক্ত-মাংস ঠান্ডা হয়ে গেছে, তখন সে বুঝতে পারে তার শিকারটা মরে গেছে! তখন সে তা ফেলে চলে যায় আপন ক্ষুধা নিবারণ করে! অতঃপর মৃত পরে থাকা হরিণটার শরীরের বাকি অংশটা আশেপাশে ওঁৎ পেতে থাকা অন্যান্য মাংসাশী প্রাণীরা এসে একের পর এক খেয়ে নিজ নিজ ক্ষুধা নিবারণ করে…

ক্যাম্পাসে যেভাবে মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেটাকে আপ্যায়ন করে খাইয়ে তিলে তিলে মেরেছে(তথ্য মতে), বিশেষ করে ছবি আর ভিডিও গুলো দেখার পরে নিজের অজান্তেই বাঘের সেই হরিণ শিকার করে…! আমি বেশ কিছুক্ষণ বাঘের ওই দৃশ্যটা মনের ছায়ানট থেকে সরাতে পারছিলাম না, I swear, by the moon and the stars and the skies…

পরবর্তীতে জানতে পারলাম যে গোটা তিনেক ছেলেকে এই হত্যার দায়ে শাহবাগ থানা পুলিশের হিফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তাদের গায়ে ছাত্রলীগের তকমা লাগানো আছে!

মনে ভাবলাম! সেলুকাস, কি বিচিত্র এই দেশ, তাই না’রে!? গত ৫ আগষ্টের পর থেকে এদেশের প্রতি ইঞ্চি ইঞ্চি জমিজমা, ঘরবাড়ি ও প্রতিটি মানুষের জীবন মরণের একটা নতুন শাসনতন্ত্র চালু করেছে এদেশের ছাত্র জনতা এবং দুইজন ডঃ ও পাঁচজন শিক্ষার্থীদের হাতে দেশটাকে তুলে দিয়েছে! সেদিন থেকেই এই দেশের সবকিছুর শাসন ব্যবস্থার দায়িত্ব দুইজন ডঃ সহ যে পাঁচজন শিক্ষার্থীরা কাঁধে তুলে নিয়েছেন জয় করেছেন এই মর্মে কিন্তু বাস্তবে দেখছি তারা তাদের নাভি-ঘর অর্থাৎ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেই তো জয় করতে পারে নাই!

এইসব তথ্য ও প্রমাণ সামনে রেখে অবশ্যই প্রশ্ন আসতে পারে, “নয়তো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের একটা ছাত্রাবাসে কি করে তথাকথিত চামচ মার্কা ছাত্রলীগ ওই ভাবে সময় নিয়ে, সিনক্রিয়েট করে তিলে তিলে হত্যা করতে পারে? ওখানে কি বর্তমান সরকারের জন্মদাতা, ছাত্র ও জনতার পাঁচ নেতার কোনো অস্তিত্ব নাই? থাকলে তারা কি করছিলো? তারা কি সবাই গণবিবাহের জন্য হাতে মেহেদি দিয়ে বসে ছিলো!?”

এসব কোন কথা? কোন ভোগবাজি? আসলে এদেশে হচ্ছেটা কি!?

তবে, এ কথায় তর্কের কোনো অবকাশ নাই যে গত ১৭ বছরের বাংলাদেশের প্রধান গুরু যেমন শেখ হাসিনা ছিলেন, বর্তমান বাংলাদেশের‌ও তেমনি একজন একমাত্র গুরুজন আছেন। গত ১৭ বছরের প্রতিটি ভালো/মন্দ কর্মের প্রধান গুরুজন বলে প্রধান আসামি যদি তিনিই হন তবে বর্তমান সময়ের জন্য‌ও যে একজন প্রধান গুরু আছেন, তাকেও একই আইনের আওতায় থাকতে হবে, ইচ্ছা বা অনিচ্ছা সত্ত্বে হোলেও।

যেমন গত ১৭ বছরের সকল অপরাধের প্রধান অপরাধী হিসেবে তাকেই সাব্যস্ত করা হয়েছে যে পদ্ধতিতে, বর্তমানের জন্য‌ও সেই একই পদ্ধতিকেই কেনো সঠিক বলে গণ্য হবে না ইতিহাসের আদালতে!?

ইতিহাস নিজেই রচিত হয়, ইতিহাস কখনোই কারো গোলামী করে না…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *