নিজস্ব প্রতিবেদকঃ পটুয়াখালীর মহিপুর প্রেসক্লাবে ভাঙচুর করে তালা ঝুলিয়ে দখলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মহিপুর থানা বিএনপির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সাংবাদিকসহ সাধারণ মানুষের মাঝে ভীতির তৈরি হয়েছে। যেখানে গণমাধ্যম বা মিডিয়া প্রতিষ্ঠান রক্ষা পায়নি সেখানে সাধারণ মানুষের রক্ষা পাওয়ার তো সুযোগই নেই।
জানা যায়, গত ৪ সেপ্টেম্বর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন কলাপাড়া প্রেসক্লাব হলরুমে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন। এ সময় মহিপুর প্রেসক্লাবের সংবাদকর্মীরা ওই মতবিনিময় সভায় যান। তখন মহিপুর প্রেসক্লাবে সংবাদকর্মী না থাকায় থানা শ্রমিক দলের সভাপতি পিন্টু ভদ্র ও মহিপুর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাজাহান পারভেজের নেতৃত্বে ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা প্রেসক্লাবের হলরুমে তালা ঝুলিয়ে দেয়। একইসঙ্গে প্রেসক্লাবের গেস্ট রুম দখল করার অভিযোগ উঠেছে মহিপুর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহজাহান পারভেজের ভাগিনা লিমনের বিরুদ্ধে। এতে বাধা দিলে প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হাবিবুল্লাহ খান রাব্বীকে হেনস্থা করা হয়।
মহিপুর প্রেসক্লাবের কয়েকজন সাংবাদিক জানান, বিষয়টি তাৎক্ষণিক বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেনকে জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেননি তিনি। পরবর্তীতে কুয়াকাটা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করে বের হওয়ার সময় আবারও তাকে জানানো হয়। তখন তিনি স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সমাধান দিতে বলে চলে যান। এ বিষয়ে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও এখন পর্যন্ত তালা খুলে দেননি তারা।
এর আগে, গত ২৮ আগস্ট ৭৯ আসামির নাম উল্লেখ করে ১০০ থেকে ১৫০ জনকে অজ্ঞাত রেখে বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা দায়ের করে মহিপুর থানা বিএনপি। ওই মামলায় মহিপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সভাপতিসহ ৫ জনকে আসামি করা হয়। তারা হলেন- সাবেক সভাপতি মনিরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মাহতাব হাওলাদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনির হাওলাদার, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিন শিকদার, অর্থ সম্পাদক মহিবুল্লাহ পাটোয়ারী।
এ বিষয়ে মহিপুর প্রেসক্লাবের একাধিক সদস্য বলেন, ‘সরকার পতনের পর মহিপুরে ব্যাপক দখল ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এসব সংবাদ প্রকাশের জেরে প্রেসক্লাবের ৫ সদস্যকে মামলায় আসামি করা হয়। এর পরপরই তারা প্রেসক্লাবের কিছু সম্পত্তি দখল করতে আসে। এতে বাধা দেওয়ায় প্রেসক্লাবে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন তারা। বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কোনো সুরাহা পাইনি।’
অভিযোগের বিষয়ে অ্যাডভোকেট শাজাহান পারভেজ বলেন, ‘লিমন নামে আমার কোন ভাগিনা নেই, প্রেসক্লাবে তালা বা গেস্ট রুম দখলে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।‘
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেনের সাথে একাধিকবার মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।