FB IMG 1724451638813

বিশেষ প্রতিবেদন : প্রিয় পাঠক, হুমায়ূন আজাদের একটা উক্তি ছিল যা তুলে ধরলাম বর্তমান বাংলাদেশের বানিজ্যিক টিভি চ্যানেলগুলোর নিউজ সংক্রান্ত চলমান কার্যক্রম দেখেঃ

“বাংলাদেশে মূর্খদের চেনার সহজ উপায় টেলিভিশনে কোন আলোচনা অনুষ্ঠান দেখা”

এছাড়াও এখন এই দেশে প্রায় শতভাগই চলে দোকানদারী সাংবাদিকতা! ফলে সাংবাদিক আর জাতির বিবেক নাই, হয়ে গেছেন বিজনেস আইটেম মেকার। তবে এদের হাত ধরেই ঘটে গেলো শিক্ষার্থীদের সরকার উৎখাতের আরেকটি আন্দোলন যা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি মাইলফলক।

২০২৪ সালের এই ছাত্র আন্দোলনেও বরাবরের মতো শিক্ষার্থীরাই বিজয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের ১৭ বছরের শাসনামলের অবসান ঘটিয়ে শেখ হাসিনাকে দেশ ছাড়া করে এবং বিদেশ থেকে নোবেল বিজয়ী ডঃ ইউনুস এসে প্রধান হয়ে দেশে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করেছেন।

তবে ডঃ ইউনুসকে প্রধান করে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হলেও ডঃ আসিফ নজরুলই যে এ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সবচেয়ে দাপুটে উপদেষ্টা, -একথাটি কেবলমাত্র বাংলাদেশের সবাই নয়, বরং সারা বিশ্বের যারা জানার তারা সবাই জানেন এবং একটি কথা সবার কাছে পরিস্কার যে এবার ছাত্র সমাজের মাধ্যমে যে রাজনৈতিক অভ্যুত্থানটি ঘটেছে এতে ডঃ আসিফ নজরুলই একমাত্র মহানায়ক।

একথাটি অনস্বীকার্য যে আওয়ামী সরকারের হাইব্রিড নেতাকর্মীদের রাক্ষুসেপনা ও জনগণের ধনসম্পদ থেকে শুরু করে রিজিক কেড়ে নেয়াটা গত ১৭ বছর ধরে দেখতে দেখতে, সইতে সইতে সাধারণ মানুষ এতোটাই অতিষ্ঠ হয়ে গিয়েছিলেন যে তারা যেভাবেই হোক, যার হাত ধরেই হোক মুক্তির আশায় ছটফট করছিলেন। ফলে শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন প্রায় সবাই এবং আওয়ামী নেতাদের একরোখা শোষণের হাত থেকে মুক্তি পেতে শিক্ষার্থীদের তারা নৈতিক সমর্থন দিয়েছেন। তবে এই আন্দোলনের শুরু থেকেই সবার একটা বদ্ধমূল ধারণা ছিলো যে শিক্ষার্থীরা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন করে এদেশের জন্য একটা নতুন ভোর নিয়ে আসবে ইনশাআল্লাহ, যেখানে গত ৫৪ বছরের কোনো রাজনৈতিক আদর্শ ও দলের পুনরাবৃত্তি থাকবে না‌, কারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনটি হয়েছে নির্দলীয় তথা আন্দোলনে কোনো রাজনৈতিক দলের ব্যানারের অস্তিত্ব ছিল না। আর সর্বসাধারণের সমর্থনের প্রধান কারণ হচ্ছে, এদেশের ইতিহাসের সকল রাজনৈতিক দলের প্রায় সকল নেতারাই ছিলেন শোষণ শ্রেনীর যারা নিজেরাই নিজেদের কার্যকলাপের কারণে জনমনে ঘৃনার পয়দা করেছেন। তাই এই জঘন্য ইতিহাস থেকে সবাই মুক্তি পেতে চায়।

সকলের স্বপ্ন ছিলো শিক্ষার্থীরা এদেশ থেকে এবার গত ৫৪ বছরের নোংরা রাজনৈতিক ইতিহাসটি চিরতরে মুছে দেবে যেমনটা তারা শুরুতে বলেছেন কিন্তু পরবর্তীতে দেখা গেছে বিষয়টা অন্যরকম এবং ডঃ আসিফ নজরুলের রাজনৈতিক মতাদর্শের একটা গোপল অভিলাষ। এর প্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হবার পরে তিনি হয়ে যান সবচেয়ে দাপুটে এবং এমন এমন কিছু কথাবার্তা ও আচরণ শুরু করে দেন যা জনগণের সাথে একধরনের প্রতারণার সম্ভাবনার ইশারা করে বৈকি।

এছাড়াও আসিফ নজরুলের মধ্যে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে অযথা মানুষে মানুষে শক্রতা সৃষ্টি করার প্রবণতাও দেখা যাচ্ছে বলে একাধিক রাজনীতি বিশেষজ্ঞরা মত প্রকাশ করেন। সর্বোপরি জনগণের প্রতি তার প্রদত্ত তথ্য উপাত্তের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর তথ্য হচ্ছে যে এদেশে ২৬ লক্ষ ভারতীয় নাগরিক সরকারের বিভিন্ন সেক্টরে চাকরি করেন!

যেখানে এদেশের হাজারো শিক্ষিতরা চাকরি না পেয়ে বেকার হয়ে ঘুরে বেড়ায় সেখানে ২৬ লক্ষ ভারতীয় নাগরিক অবৈধ উপায়ে সরকারী চাকরী করেন! সাধারণ মানুষ একথাটি কিছুতেই মেনে নিতে না পেরে বিভিন্ন মাধ্যমে বারংবার ডঃ আসিফ নজরুলকে আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, “প্রকাশ করা হোক সেই ২৬ লক্ষ ভারতীয় নাগরিকের পরিচয়ের তালিকা।”

সাধারণ মানুষের কথা হচ্ছে যে তারা ওই ২৬ লক্ষ ভারতীয় নাগরিকের তালিকা পেলেই সবাই মিলে গিয়ে হাজির হবেন বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনারের অফিসে। তারা সেই অফিসে কর্মরত একজন ভারতীয় নাগরিকেও ততক্ষণ পর্যন্ত ভারতে ফিরে যেতে দেবেন না যতক্ষণ পর্যন্ত না ভারত সেই সমস্ত টাকা বাংলাদেশকে ফেরত না দেয় যা এতোদিন ২৬ লক্ষ ভারতীয় নাগরিক অবৈধ উপায়ে সরকারী চাকরী করে কামিয়েছেন।

এছাড়াও সাধারণ মানুষ জানান যে তারা সেই টাকা ফেরত পাবার পরে ভারতের সাথে একটা দরকষাকষি করবেন। তারা ভারত সরকারের কাছে জানতে চাইবেন যে এতো বছর ধরে যারা এদেশের সাথে এহেন প্রতারণামূলক জঘন্যতম একটা অপরাধের অপরাধী সেইসব ভারতীয় নাগরিকদের কেনো ও কিসের বিনিময়ে আটকে না রেখে এমনিতেই ভারতে ফেরত পাঠাবেন!?

তাদের কথা হচ্ছে, “এক্ষেত্রে ভারত সরকারের প্রতি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিনিময় চুক্তি হিসাবে এক নম্বরের চয়েস থাকবে যে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করা যেকয়টি নদ-নদী আছে এবং সেসব নদ-নদীগুলোর উপরে ভারত যে কয়টি বাঁধ স্থাপন করেছে সেই সব বাঁধের পানি কখন কিভাবে কতটুকু ছাড়বে না ছাড়বে সেবিষয়ে একটা সিদ্ধান্তে আসতে হবে। এই লক্ষ্যে বাংলাদেশের জনগণের মনমতো দেয়া সিদ্ধান্তের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা চুক্তিতে ভারত সরকারের স্বাক্ষর করার পরেই তারা আটকে রাখা ভারতীয় নাগরিকদের ভারতে ফিরে যেতে দিবেন, অন্যথায় নয়।

এদেশের মানুষ মনে করেন, অবস্থার ওই গ্যাড়াকলে পরে ভারত বাধ্য হয়েই বাংলাদেশের সাথে একটা আপোষ করবে এবং এতে করে ভারতের কারণে বাংলাদেশের যেসব বানভাসি মানুষ ছিলেন তারা আজীবনের জন্য মুক্তি পাবেন।

এছাড়াও সবাই মনে করেন, এটা হবে এবারের ছাত্র আন্দোলনের ঐতিহাসিক মহান বিজয়। এক্ষেত্রে সবাই একমত যে একমাত্র ডঃ আসিফ নজরুলের হাতেই এর চাবিকাঠি। ডঃ আসিফ নজরুল যদি সেই ২৬ লক্ষ ভারতীয় নাগরিকদের তালিকা গণমাধ্যমে প্রকাশ করে দেন, একমাত্র তবেই বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে সম্ভব হবে ভারত বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিজয়টি লাভ করা এবং ভারতকে জীবনের তরে একটা দাঁতভাঙা জবাবও দেয়া যাবে। এখন সবকিছু ডঃ আসিফ নজরুলের হাতে।

পরিশেষে বলতে চাই, অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হচ্ছে বর্তমানে আমাদের দেশ ভারত থেকে আসা পানিতে ভেসে যাচ্ছে, বাংলার মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছাড়া হয়ে একটা কঠিন পরিস্থিতির শিকার হয়ে আছেন, তাই এখনই সময়। এই মুহূর্তেই যদি ডঃ আসিফ নজরুল সেই ২৬ লক্ষ ভারতীয় নাগরিকদের তালিকাটি প্রকাশ করে দেন তবে সব বাদ দিয়ে এদেশের মানুষ প্রথমেই ভারতীয় হাইকমিশনারের অফিসটি ঘেরাও করে সেখান থেকে সবাইকে তুলে এনে নিজেদের হেফাজতে আটকাতে রাখবেন, সাথে বোনাস হিসেবে অবৈধ পথে সরকারী চাকুরে সেই ২৬ লক্ষ ভারতীয় নাগরিকরা তো রয়েছেনই।

এমতাবস্থায় ডঃ আসিফ নজরুলের প্রতি সকালের আকুল আবেদন, “কালক্ষেপন না করে এখনি সেই তালিকাটি প্রকাশ করুন। এতে করে ভারত-বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন খেলাটি হয়ে যাবে যে খেলায় ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয় ১০০% সুনিশ্চিত।”

তাই আমরাও সবাই ডঃ আসিফ নজরুলকে পুনরায় আহ্বান করি, “আপনি এক মুহুর্ত সময় নষ্ট না করে ২৬ লক্ষ ভারতীয় নাগরিকের তালিকাটি প্রকাশ করুন আর আমরা ফিরিয়ে আনি আমাদের হক লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা যা ২৬ লক্ষ ভারতীয় নাগরিকরা এতোদিন বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিপক্ষে গিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহীতার অপরাধ করে কামিয়েছেন, পাশাপাশি আমাদের দেশের ২৬ লক্ষ বেকারের চাকরির ব্যাবস্থাও করা যাবে তাদেরকে চাকরিচ্যুত করে।

সর্বোপরি ভারত-বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন রাজনৈতিক খেলাটিতে আমরা জয় লাভ করি যা সুনিশ্চিত। অন্যথায় আমরা ভাবতে বাধ্য হবো যে শেখ হাসিনার মতো আপনি আসিফ নজরুলও ভারতের পা’চাটা একজন জঘন্য দালাল। ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ফাইলপত্রের মতো এবারও আপনি জেনেশুনে ২৬ লক্ষ ভারতীয় নাগরিক যারা অবৈধ পথে বাংলাদেশে চাকুরী করে তাদের তালিকাটি লুকিয়ে রেখে বাঙালী জাতির সাথে মীর জাফরের চেয়েও মারাত্মক প্রতারণা করছেন।”

উল্লেখ্য যে নরেন্দ্র মোদি, ২০১৫ ভারত এ যাবৎকালে বাংলাদেশে প্রবেশকারী নদীগুলোতে সেচ প্রকল্প, ক্যানেল খনন, বিদ্যুৎ উৎপাদন, আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্প, গ্রোয়েন ও ব্যারাজ নির্মাণের নামে ৩০০০+ বাঁধ দিয়েছে। এর মধ্যে বিশ্বের ৯ম বৃহত্তর ও ১৫তম দীর্ঘতম নদী ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার নদীতে দিয়েছে ১২টি বাঁধ।

এখন সবকিছু ডঃ আসিফ নজরুলের হাতে, তিনিই পারেন এদেশের বানভাসিদের আজীবনের জন্য মুক্তি দিতে।

আসিফ নজরুলের বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *