2021 03 04 60408c14cdf14

স্পোর্টস ডেস্ক : বদলে গেছে দেশের সরকার, পরিবর্তনের সুর সবখানে। রাজনৈতিক পালাবদলের সাথে তাল মিলিয়ে দেশের ক্রীড়াঙ্গনেও পরিবর্তনের আভাস। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি এ মুহূর্তে নাজমুল হাসান পাপন, যিনি ছিলেন শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী। সেই সরকার ভেঙে গেছে, পাপনের মন্ত্রিত্বও শেষ। প্রশ্ন উঠছে তার আগামী দিনের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার নিয়েও। তবে মন্ত্রিত্ব কিংবা সংসদ সদস্যপদ হারানো পাপন এখনই সরছেন না বিসিবি প্রধানের পদ থেকে।

বিষয়টি খোলাসা করা যাক। বিশ্বের অন্য সব ক্রীড়া সংস্থার মতো বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসিও রাজনীতিমুক্ত। আইসিসির অধীনস্থ কোনো সংস্থারও নেই রাজনীতির হস্তক্ষেপের সুযোগ। বাংলাদেশের ক্রিকেটের শীর্ষ পদে নাজমুল হাসান পাপনের আবির্ভাবের পেছনে রাজনৈতিক প্রভাব ছিল বটে। তবে বর্তমানে যে পরিচালনা পর্ষদ বিসিবির, সেখানে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েই সভাপতি হয়েছেন তিনি।

৬৩ বছর বয়সী বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের বিসিবির এই কমিটির সভাপতি হিসেবে মেয়াদ ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তার আগে তাকে সরানোর সুযোগ নেই, যদি না তিনি স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ান। পাপনকে সরিয়ে অন্য কাউকে রাজনৈতিক প্রভাবে সভাপতির দায়িত্ব দিলে পড়তে হবে আইসিসির নিষেধাজ্ঞায়। ক্ষমতার পালাবদলের পর যে নিষেধাজ্ঞায় পড়েছিল শ্রীলঙ্কা।

আইসিসির সদস্যপদের মানদণ্ডের আইনে বলা আছে, দেশের ক্রীড়া সংস্থার পদগুলোতে চলবে না সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ। বিসিবিও একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান। নাজমুল হাসানকে জোরপূর্বক সরাতে গেলে বিষয়টি গণ্য করা হবে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ হিসেবে। তবে বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে গঠনতন্ত্র মেনে নির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদে যদি কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আসেন, তাতে কোনো বাধা নেই।

রাজনৈতিক বা সরকারি হস্তক্ষেপে আইসিসির নিষেধাজ্ঞা পেলে বাংলাদেশ খেলতে পারবে না আন্তর্জাতিক ক্রিকেট, হোক তা জাতীয় পুরুষ দল, নারী দল কিংবা বয়সভিত্তিক দল। আয়োজন করতে পারবে না কোনো আইসিসি স্বীকৃত টুর্নামেন্ট, সিরিজ এমনকি বিপিএলের মতো ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটও। বন্ধ হয়ে যাবে আইসিসির তহবিল। সব মিলে হুমকির মুখে পড়বে দেশের ক্রিকেট।

শ্রীলঙ্কা আইসিসির নিষেধাজ্ঞা পাওয়ার পর অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব হারায়। আগামী অক্টোবরে নারী টি-২০ বিশ্বকাপ আয়োজনের কথা রয়েছে বাংলাদেশের। বাংলাদেশে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিয়েছে তাতে নেই কোনো একক রাজনৈতিক দলের আধিপত্য বা প্রভাব। আপাতদৃষ্টিতে তাই বলাই যায়, নাজমুল হাসান পাপন সরে না দাঁড়ালে, তার অধীনেই হবে প্রমীলা টি-২০ বিশ্বকাপ, এমনকি ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনিই থাকছেন বিসিবি সভাপতির দায়িত্বে।

অবশ্য পাপন সরে না দাঁড়ালেও রদবদলের একটি সুযোগ রয়েছে। ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যে উপদেষ্টা, তিনি বিসিবি প্রধানের নিষ্ক্রিয় থাকা সাপেক্ষে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আইসিসির কাছে বিসিবির অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ড গঠনের আবেদন করতে পারবেন। সংস্থার সার্বিক কর্মকাণ্ড সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে সেক্ষেত্রে অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ড গঠনের অনুমতি দেওয়ার সুযোগ আছে আইসিসির। সেক্ষেত্রে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ই প্রস্তাব ও নিয়োগ দেবে নতুন বিসিবি প্রধানের বিষয়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *