shipwreck 1

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তিনশ বছর আগে ব্রিটিশ জাহাজের সঙ্গে লড়াই করে স্পেনের স্বর্ণ ও মূল্যবান রত্ন বোঝাই ‘দ্য সান জোসে’ নামে জাহাজটি ক্যারিবিয়ান সাগরে ডুবে যায়। জাহাজটির ধ্বংসাবশেষ ও তার মধ্যে থাকা সম্পদের খোঁজ পাওয়ার দাবি করেছে কলম্বিয়া।

গতকাল শনিবার কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট জুয়ান ম্যানুয়েল সান্তোস এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বের অন্যতম মূল্যবান জাহাজের ধ্বংসাবশেষের খোঁজ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। দেশটির সেনাবাহিনী কার্তাজেনা শহরের কাছে ক্যারিয়াবিয়ান সাগরের উপকূলীয় এলাকায় জাহাজটির সন্ধান পায়।

১৭০৮ সালের ৮ জুন একটি ব্রিটিশ জাহাজ আক্রমণ করলে বিপুল পরিমাণ সোনা ও বহুমূল্যবান রত্ন বোঝাই বিশাল আকৃতির সান জোসে জাহাজটি ক্যারিবিয়ান সাগরে তলিয়ে যায়।

ম্যানুয়েল সান্তোস সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘মানব ইতিহাসের বৃহত্তম আবিষ্কার বলা না হলেও, মহত্তম আবিষ্কারের একটি এই জাহাজের ধ্বংসাবশেষের সন্ধান।’

তিনি বলেন, ‘কলম্বীয় সরকার তাদের সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার হিসেবে ডুবে যাওয়া এই জাহাজের অন্বেষণ ও রক্ষণে অভিযান অব্যাহত রাখবে।’ কলন্বিয়ার রাজধানী বোগোটা থেকে আল জাজিরার প্রতিনিধি আলেসান্দ্রো রামপিয়েতি বলেছেন, ‘ডুবে যাওয়া দ্য সান জোসেকে বিশ্বাস করা হয় ‘ ‘হলি গ্রেইল অব এ শিপরিক’। এই জাহাজটিতে যে পরিমাণ সম্পদ রয়েছে, তার আনুমানিক মূল্য হতে পারে চার থেকে ১৭ বিলিয়ন ডলার।’

তিনি বলেন, ‘এতে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই যে, কয়েক শতকের অনুসন্ধানের ফলে অবশেষে জাহাজটি আবিষ্কার করা গেছে। অনুসন্ধানকারী দল জাহাজটির পিতলের তৈরি কয়েকটি কামানের খোঁজ পেয়েছে। কামানগুলোতে ডলফিনের নকশা খোদাই ছিল। এতেই প্রমাণিত হয়, এটি স্পেনের সেই সান জোসে জাহাজ।’

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট

আল জাজিরার ওই প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ‘সংবাদ সম্মেলনে সান্তোস জাহাজটি আবিষ্কারের ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানাননি। রাষ্ট্রীয় গোপনীয় বিষয় হওয়া জাহাজটির প্রকৃত অবস্থান সম্পর্কেও তিনি কিছু বলেননি।’

সান জোসের প্রকৃত মালিকানা নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরেই আইনি লড়াই চলছিল। জাহাজটির খোঁজে যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানাধীন অনুসন্ধানকারী কোম্পানি ‘সি সার্চ আর্মাদার (এসএসএ)’ সঙ্গে কলম্বিয়া সরকারের দ্বন্দ্ব শুরু হয়। ১৯৮১ সালে এসএসএ দাবি করে, তারা জাহাজটির প্রকৃত অবস্থান জানতে পেরেছে।

পরে এসএসএ ও কলম্বিয়া সরকারের এই বিতর্কটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চলে যায়। এরপর সিন্ধান্ত হয় জাহাজ উদ্ধারের পর যা সম্পদ আহরণ হবে, তা উভয় পক্ষ সমান ভাগে ভাগ করে নিবে। পরে অবশ্য কলম্বিয়া দাবি করে ওই সম্পদের মালিক কেবল তারাই।

নানা বিতর্কের পর ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত রায় দেয় ডুবে যাওয়া স্পেনের ওই জাহাজের প্রকৃতপক্ষে মালিক কলম্বিয়াই।

(তথ্যসূত্র : আল জাজিরা অনলাইন)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *