জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী দলটির কার্যক্রম নিষিদ্ধ হলো। দীর্ঘ দিন ধরে মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন মহল থেকে জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি করা হচ্ছিল।
অবশেষে এখন সরকারের নির্বাহী আদেশে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮(১) ধারা অনুযায়ী জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রশিবির ও তাদের অন্যান্য অঙ্গসংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হলো।
আজ দুপুরে এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনি মতামত পাঠানোর পর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ছাত্রশিবির এবং তাদের সংশ্লিষ্ট সব সংগঠন আর এই নামে রাজনীতি করতে পারবে না।
“বন্ধুত্বে উদার, শত্রুতায় নির্মম” -এই আদর্শে উজ্জীবিত জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবির সম্পর্কে বলতে গেলে আমি মহানবীর (দঃ) -এর সেই সতর্কবাণীটির কথা স্বরণ করিয়ে দিবো :
শেষ জামানায় কিছু প্রতারক সৃষ্টি হবে। তারা ধর্মের নামে দুনিয়া শিকার করবে। তারা মানুষের নিকট নিজেদের সাধুতা প্রকাশ ও মানুষকে প্রভাবিত করার জন্য ভেড়ার চামড়ার পোষাক পড়বে (মানুষের কল্যাণকারী সাজবে)। তাদের রসনা হবে চিনির চেয়ে মিষ্টি কিন্তু তাদের হৃদয় হবে নেকড়ের হৃদয়ের মতো হিংস্র।
-তিরমিজী
একাত্তরে জায়ামাতের আদর্শ ছিল, “পাকিস্তান ভাঙ্গা যাবে না এবং ভারতের গোলাম হওয়া যাবে না”। তবে নতুন মিলেনিয়ামে এসে তাদের সেই ভাবনা মোড় নিয়েছে- “এদেশটাকেই আমরা পাকিস্তান বানিয়ে নিই না কেন!”
সম্ভব অসম্ভব পরের কথা- এ লক্ষ্যে তারা গুছিয়ে অনেক দূর এগিয়ে যেতেও সক্ষম হয়েছে বারংবার। আর তাতে কখনো কাঁধ পেতে দিয়েছে আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং জাতীয় পার্টি। ‘৭৫ পরবর্তী পুনর্বাসনে গোলাম আযম তাঁর নাগরিকত্ব পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি যে কাজটি নিশ্চিত করতে সক্ষম হন তা হলো সারা দেশে তখন পর্যন্ত রাজাকার বলে নিগৃহিতদের একটা হিল্লে করা। আশির দশকের সাপ্তাহিক বিচিত্রার একটি প্রবন্ধে এর ডিটেলে তুলে ধরতে গিয়ে উদাহরণ হিসেবে ছবিসহ প্রকাশিত হয়েছিল ‘এক কানকাটা রাজাকারের প্লাস্টিক সার্জারি করিয়ে আনার ছবি’।
একটি কথা না বলেই পারছি না, “মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষের শক্তি ও তা নিয়ে এখন এদেশ বিভাজন চলছে বলে যারা বুলি কপচান, তারা হয় আসল সত্যিটা জানেন না নয়তো তা স্বীকার করতে লজ্জা পান।
‘৭১-এ কারা লড়াই করেছে?
১২ বছরের যে শহীদ বাঘা সিদ্দিকীকে বলেছিলেন ‘গ্রেনেড দেন খানগো মারুম’ কিংবা ৬৫ বছরের কৃষক বশিরউদ্দিন যে তাঁর চওড়া কাঁধে মর্টারের ভার তুলে নিয়ে অবহেলায় সতীর্থদের বলেছিলেন, ‘কী যে কও ভাতিজারা, গরু না থাকলে এই কাঁধে জোয়াল বইছি, আর এইডা কী ভার?’ কিংবা আমাদের চট্টগ্রাম মেডিকেলের তরুন ডাক্তার শাহআলম বীরোত্তমের কথা, যিনি ক্যারিয়ারের চেয়ে দেশ বড় ভেবে খরস্রোতা কর্ণফুলি সাঁতরে উড়িয়ে দিয়েছিলেন, অথবা বিলেতের রয়্যাল কলেজ অব সার্জনস-এ এফআরসিএস পড়াকালীন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে তিনি চূড়ান্ত পর্ব শেষ না-করে বন্ধুদের নিয়ে পাকিস্তানি পাসপোর্টে পুড়িয়ে বিদ্রোহ ঘোষণা করার পর লন্ডন থেকে ভারতে ফিরে এসে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ার নিমিত্তে আগরতলার মেলাঘরে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে গেরিলা প্রশিক্ষণ নেন এবং এরপরে ডা. এম এ মবিনের সঙ্গে মিলে সেখানেই ৪৮০ শয্যাবিশিষ্ট “বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল” প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করেন। শত্রুদের মোকাবেলা একমাত্র কি তারাই শুধু করেছিলেন!? এদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মুক্তিযোদ্ধা তারাও, যারা জানের মায়া না করে ঘরে আশ্রয় দিয়েছেন গেরিলাদের, না খেয়ে খাইয়েছেন সোনার ছেলেদের, এক হাড়ি ভাত রেতে তা দরজার বাইরে রেখে এসে দরজা বন্ধ করে ঘুমের ঘোরে অপেক্ষা করতেন ‘মুক্তি এসে নিয়ে যাবে, আহারে বাছারা…!’ ওরা একটি পতাকার জন্য জানের বাজি ধরেছিলেন, একমাত্র “স্বাধীনতা” -এই ভাবনায়। বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে তখন মুক্তিযোদ্ধা। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ শুনে সত্যি সেদিন বাংলার সারে কোটি বাঙালীর যার যা কিছু ছিলো তাই নিয়ে যুদ্ধ করেছেন এবং তখন হাতে গোনা যে ক’জন রাজাকার ছিলো তাদের পতাকা ছিলো চাঁনতারা আর মুখে ছিলো পাকসারজমিনবাদ…। আর এখন মুক্তিযোদ্ধাদের সনদধারীদের মধ্যে প্রায় একতৃতীয়াংশই ভুয়া বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হবার পরেও প্রতিটি সনদ রিভিউ করা হয় না! কেনো? এর উত্তর একটা পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রকে অনুমান করতে বলে দেখেন ও কি বলে!
আরেকটু পেছনে ফেরা যাকঃ ‘৭০-এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর দল বাঙ্গালীদের সংখ্যাগরিষ্ট ভোট পেয়েছিলেন একটাই ডাকে- ‘ভোট দাও আমি তোমাদের নিজের দেশ দেব’। ২৫শে মার্চ রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী চরম হিংস্রতায় ঝাঁপিয়ে পরার পর, বঙ্গবন্ধু বন্দী হলেন। তাঁর সঙ্গীরা পাল্টা প্রতিরোধের বাণী নিয়ে ছড়িয়ে পরলেন এদিক ওদিক, কেউবা সীমানার বাইরে। তখন বন্দুকের নল খুঁজে বেড়াচ্ছিল আওয়ামী লীগ আর হিন্দুদের। এই সময় ফিল্ডে নামল যে দুটি দল তারা হচ্ছে মুসলিম লীগ ও জায়ামাতে ইসলামি, পাকিস্তানিদের কাছে বিহারিদের পর ওরাই সাচ্চা মুসলমান ও সেমি-পাকিস্তানি! তাদের কাজ ছিল দেশদ্রোহী যারা ভারতের দালালী করে পাকিস্তান ভাঙ্গতে চায় তাদের চিহ্নিত করা ও ধরিয়ে দেওয়া। একাজে মুসলিম লীগ একটু মাঝামাঝি বিবেকের ছিল, সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করতে তারা গঠন করল ‘শান্তি কমিটি’। জামাত এক কদম আগে বাড়া- ‘রাজাকার’। কি সুন্দর নাম! স্বেচছা সেবক! -আসল অর্থ ‘ঘাতক-দালাল’।
কোন্ বাড়িতে সুন্দরী মেয়ে আছে, কার টাকা পয়সা আছে, হিন্দু কই, কোন বাড়ির ছেলে দেশের ডাকে ঝাঁপ দিছে এসবের তালিকা করো, জ্বালাও পোড়াও। একেক জায়গায় অবশ্য একেক রকম কার্যক্রম। তুমুল যুদ্ধের সময় তাদের লুঙ্গির উপর খাঁকি ওর্দি জুটে সাথে থ্রি নট থ্রি রাইফেল। পাকিস্তানিরা বাঙ্কারে নারী নিয়ে ফুর্তি করে, তারা বাইরে পাহারা দেয়- আর মনে মনে অপেক্ষায় থাকে যদি ঝুটা মিলে। হাজার হোক মালে গনিমত! শত্রু সম্পত্তি জায়েজ আছে! ১০ লাখ বাঙ্গালী বীরাঙ্গনা তাদের দালালীতে সম্ভ্রম খুইয়েছেন। লাখখানেক যুদ্ধশিশুকে ‘৭২ সালে বিদেশে চালান করা হয়েছে। তাদের অনেকেই ফিরে এখন মাকে খোঁজে। কিন্তু কে স্বীকার করবে সেই অপমান!
এক্ষেত্রে ব্যাতিক্রমও ছিল, তাও শুনেছি। অনেকে জান বাঁচাতে রাজাকারের তালিকায় নাম তুলেছে। কেউবা ফায়দা লুটতে। কেউ কেউ নাকি গোপনে মুক্তিদের সাহায্যও করেছে ‘বিবেকবান রাজাকার!’ শহুরে পরিস্থিতি অবশ্য ভিন্ন। জামাত ও শিবির (তখন নাম ছিল ইসলামী ছাত্র সংঘ) মহানবী ও ইসলামের বিখ্যাত বিজয় বদর যুদ্ধের অপমান করে মাঠে নামে ‘আল বদর’ নাম নিয়ে। আর আল-শামস নামটা কোত্থেকে এসেছে, এটার সঠিক তথ্য আমার জানা নাই। তবে এরা ছিল ‘জেনুইন কিলার’ -তাও পারভার্ট ধরনের।
বুদ্ধিজীবি হত্যার নীলনক্সা ও বাস্তবায়ন ঘটায় আল শামসই; যার প্রথম সারির নেতা ছিলেন কিছুদিন আগের দুই জামাতি মন্ত্রী নিজামী ও মুজাহিদ। ফকিরাপুলে মুজাহিদ পাকিস্তানের পতাকা হাতে সামরিক মার্চ করেছে-এমন ছবিও আছে। যুদ্ধ শেষে এরা কে কোথায় ডুব দিয়েছিল যদিও সেটা গবেষনার বিষয় তবে পাকিস্তানিরা কিন্তু তাদের এইসব দোসরদের পালাবার সময় সঙ্গী করেনি। বলা হয় তারা অনেকেই লুটের সোনাদানার কিছুটা বখরা দিয়ে জানের সদকা কিনেছিলেন। মুক্তিযোদ্ধাদেও মধ্য থেকেও অনেকেই একম্মের মধ্যে ঢুকে পরেছিল, দিলে পাপ জমা হয়ে গিয়েছিল লোভে পরে। ১৬ ডিসেম্বর এ জাতীয় বেশকিছু রাজাকাররা কুড়িয়ে পাওয়া রাইফেল নিয়ে ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দিয়ে শরিক হয়েছিল বিজয় মিছিলে। তাদের রসিকতা করে বলা হতো ‘সিক্সটিনথ ডিভিশন’ এবং অধঃপতিতরাও আছেন।
ঢাকা কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধাদের কথা বললে একজন মায়ার কথাই ধরুন। ‘৭১-এ রাজধানীর বুকে শত্রুসেনার ঘুম হারাম করা ‘ক্র্যাক’ প্লাটুনে’র সদ্যস্য ছিলেন তুমুল সাহসী এই যুবক। পেয়েছেন বীর বিক্রম খেতাব। অথচ ক্ষমতায় গিয়ে বিকিয়ে দিলেন তার চেতনা ও আদর্শ। ছেলে দিপুটাও নষ্ট হয়ে গিয়েছিল নিঃসন্তান সাহারা খাতুনের ছত্রছায়ায়, অথচ কিছুই বলেননি, আজ সে ছেলেহারা এক অসহায় বাবা! এখন? উল্লেখ্য যে এখানে উনি একটি উদাহরন মাত্র অন্যকিছু নয়। আমরা কত শতরাই এহেনো কমপ্রোমাইজ করি! কি করি না বুঝি!?
প্রশ্ন আসে, তাহলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কেন ওদের ক্ষমা করলেন?
এই প্রশ্নটা এদেশের অনেক অর্বাচীনেরই। এক কথায় উত্তর হচ্ছে, মানুষটার দিলে মায়া ছিল বড্ড বেশী, কারণ তাঁর কলিজাটা যে ছিল বিশাল! তিনি বললেন, ‘কাদের মারব? এরাই তো কারো ভাই, কারো বাবা।’ আমি মনে করি তিনি ভুল করেছিলেন, মস্তবড় ভুল করেছিলেন রাক্ষসের রক্তবীজের ঝাড় শেষ না করে দিয়ে। তবে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার একজন বলেছেন তাদের গ্রামের খলিল চাচা ভুল করেন নাই, তিনি ব্রাশফায়ারে নিজের বাবাকে মারতে দ্বিধা করেননি দালাল বিধায়, মারার পরে থু থু ছিটিয়ে ছিলেন নিজের বাবার মরা লাশের মুখে।
‘৭৫ পরবর্তী সরকারের আনুকুল্যেই পুনরায় ফিরে আসে ওই হায়েনাদের দল, একপ্রকার বুক ফুলিয়েই! এরপর তো তাদের মিডাস টাচ- যেখানে হাত দেয় সেখানেই সোনা। আশির দশকের মাঝামাঝি চট্টগ্রাম-রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চলে যায় তাদের দখলে। চট্টগ্রামে জাতীয় পার্টির ছাত্রনেতা হামিদ ভাইকে সালাম দিয়ে হ্যান্ডশেইক করল একজন শিবির নেতা, তারপর আর হাত ছাড়ে না। আরেকজন এসে কিরিচ দিয়ে দেয় এক কোপ! সমানে রগকাটা। আর কি প্ল্যানিং! খালাতো ভাই শাহীন বিবিএ’র ছাত্র, বলে, ‘আমরা বন্ধুবান্ধবীরা আড্ডা মারছি এরমধ্যে হঠাৎ ওমর, শিবির নেতা দাঁত কেলিয়ে ভিলেনের মতো হাসতে হাসতে আমার জামার বুকের উপরের বোতামটা লাগিয়ে দিতে বলে, ‘চিঃ চিঃ শাহীন ভাই, এগুলো করে না’। আমার লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছা করছিল কিন্তু!” রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের গ্রামে প্রথম লজিং টিচার হিসেবে ঢুকে তারপর বিয়ে-শাদি করে আত্মীয়তা করা। ব্যাস এভাবেই জাহাঙ্গীর নগর পর্যন্তও তাদের দখল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অবশ্য তাদের ঘেরের বাইরে ছিল সবসময়ই, ঢাবির প্রগতিশীল ছাত্রদের কারণে (এমনকি ছাত্রদলও এই ব্যাপারে অনেকখানি আপোষহীন!) ফলে ডাইরেক্ট অ্যাকশনে অক্ষম। আর মহাবিদ্যালয়গুলো? ওগুলোও তাদের।
‘মা গো ভাবনা কেন, আমরা তোমার শান্তি প্রিয় শান্ত ছেলে, তবু শত্রু এলে অস্ত্র হাতে ধরতে জানি। তোমার ভয় নেই মা আমরা প্রতিবাদ করতে জানি…’
আজ বলি, কে বলছে ওটা মুক্তিযুদ্ধের গান। ওটা তো একসময়ের ‘ক্লোজআপ ওয়ান’ নোলক বাবু গাইছে! তাই না? আর যদি তাই না হয় এসব কি করে হয়? সারারাত প্রেম প্রেম খেলা, শেষ রাতে কয় ‘সখি তুমি কার?’ হঠাৎ আন্দোলন ডেকে ঘরের ছেলেদের পথে নামিয়ে মামলা হামলা, জান জুখামের মধ্যে ফেলে আবার হঠাৎ যখন ঘোড়া পেয়ে খোঁড়া হয়ে যায় গোড়ার নেতাটা! তখন বলে আমার প্রিয় গানই হচ্ছে, “আমার বলার কিছু ছিল না…”
পুনশ্চ : বাঙালী হয়ে বাঙালীকে তাক করে গুলি করে সাধারণ বাঙ্গালীদের ঘামের পয়সা দিয়ে কিনে দেয়া পোশাক পরে! আর সেই গুলিতে অগনিত বাঙালী পাখির মতো মরে! শিশুরাও এই মৃত্যুর মিছিল থেকে বাদ পরে না!
রংপুরের সাংবাদিক প্রিয়’র ছোট্ট শোনামনি পদ্মপ্রিয় অপেক্ষায় আছে বাবা এলে পিঠে চড়ে ঘোড়া ঘোড়া খেলবে কিন্তু তার বাবা প্রিয় তো ঘাতকের গুলিতে নিহত হয়েছেন! ওই শিশুটা মৃত্যুর কি বোঝে!? ও বোঝে না বলেই তো আগেই মা মরেছে তার কোন শোকতাপ নাই, তার শুধুই অপেক্ষা, বাবা আসবে। বাবা এলেই বাবার সাথে খেলবে। তোতা পাখির মতো কথা বলে, মুখে নতুন কথা ফুটেছে তার, ভাঙ্গা ভাঙ্গা কথা চার বছরের পদ্মপ্রিয়’র, কিন্তু তার বাবা যে আর আসবে না!
এছাড়াও দুদিন আগে হারুন ভাইয়ের ভাতের হোটেল বন্ধ হোলো, তার আর নানকের ভিডিও ভাইরাল, মন্ত্রী পলকেরও, সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন জানিয়েছেন, “আরোও আসছে!” দেখাবেন ক্ষমতা কুক্ষিগত করে কিভাবে নষ্টামি করে!
ওদিকে আজ দিনের বেলায় একদিকে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কদের ডিবি থেকে মুক্তি দেয়া হোলো, অপরদিকে জামায়াত চতুর্থ বারের মতো নিষিদ্ধ ঘোষিত হোলো আর আমি আজ রাত জেগে এই লেখাটা লিখে ফেইসবুকে কেনো পোস্ট করেছি, এই প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে, “আমি জানি, আমি এদেশের কোনো তথাকথিত সেলিব্রিটি বা দোকানদার মিডিয়া না যে আমার লেখা লক্ষ লোকে পড়ে কিছু অনুধাবন করার চেষ্টা করবেন। চতুর্থবারের মতো জামায়াত নিষিদ্ধ হয় এদিকে পঞ্চম বারের অপেক্ষা করে মন! এইসব নপুংশক দেশপ্রেম আর ক্ষমতা কুক্ষিগত করে পুতুল খেলা আমি এসব দেখে সইতে পারি না, জানি তাতে কারো কিচ্ছু আসে যায় না, তবুও লিখি আর লিখে ফেইসবুকে পোস্ট করি যদি একটা লোকও পড়েন! যদি একজনও আমার বেদনা বোঝেন! যদি একটি প্রাণও টের পায় আমার ‘সবাই মিলে ভালো থাকার স্বপ্নটা’ -এই আশায়। তবে আমি খুব খেয়ালী মানুষ তাই কে পড়লো না পড়লো, কে কি ভাবলো না ভাবলো, মিললো না চিরলো, -এসব নিয়ে আমার কোনো টেনশন নাই, ‘সো যা বেটা গাব্বার সিং আ যায় গা’, শুভ রাত্রি 🌹 🇧🇩
(বিঃদ্রঃ – পোস্টের ছবিটার কারণ, ওর ভিতরে আমার সাথে আমার স্বপ্নরা লুকোচুরি খেলে)