বিশেষ প্রতিবেদন : সম্প্রতি খুলনা জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বিভিন্ন গ্রামে বাল্য বিবাহের প্রবনতা বেড়েই চলেছে। অতি প্রচীন কাল থেকেই সনাতন ধর্মালম্বীদের মাঝে অতি মাত্রায় বাল্য বিবাহের প্রচলন ছিলো। কালের বিবর্তনে নানা কুসংস্কার ও অপসংস্কৃতি দুর করে বাল্য বিবাহ রোধ কিছুটা পরিবর্তন হয়। এমনকি প্রচীন কাল থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তনের ফলে বিধবা বিবাহ পদ্ধতি চালু হাওয়ায় নানা ধরনের কুসংস্কার থেকে পরিত্রাণ পেল সনাতন সমাজ।
উল্লেখ্য যে বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মমতাময়ী মাতা শেখ হাসিনার কঠোর পদক্ষেপ গ্রহনের ফলে সনাতন ধর্মালম্বীদের মাঝে বাল্য বিবাহ রোধ হলেও তেরখাদা উপজেলায় বিগত কয়েক বছর পূর্বে থেকেই প্রভাব শালী নেতা ও গ্রাম্য মাতব্বর গনের সমর্থনে গ্রাম্য বাল্য বিবাহ আবারও এক ধাঁপ বৃদ্ধি পেয়ে প্রাচীন যুগের ঐতিহ্য বাল্য বিবাহের প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। তবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তনের কারণে গোপনে গোপনে নাবালক/নাবালিকাদের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করছে ঘুনেধরা হিন্দু সমাজ। মাঝে মধ্যে দেখা যায়, গরীব অসহায় পিতার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে/মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়া নাবালিকাদের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করার ঘৃণ্য ঘটনা ঘটছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় থানা প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে অহরহ বাল্য বিবাহ সংঘটিত হচ্ছে। এই অপরাধ মূলক বাল্য বিবাহে খুলনা জেলার রূপসা ও তেরখাদা উপজেলার বিভিন্ন হিন্দু গ্রাম গুলোতে গোপনে ঘুরে দেখা যায়, বাল্য বিবাহের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, তেরখাদা থানা কমপ্লেক্সে মানবতার সেবক ন্যায় পরায়ণ মো: জহুরুল আলম যোগদানের পর কঠোর হস্তে বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ করেন। তেরখাদা থানা নির্বাহী কর্মকর্তা জহুরুল আলম দীর্ঘ ২৬ মাস তেরখাদায় অবস্থান কালে বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গোপন সুত্রে অভিযান চালিয়ে বাল্য বিবাহ নিয়ন্ত্রন করতে সক্ষমতা অর্জন করেন। তেরখাদা থানা নির্বাহী কর্মকর্তা জহুরুল আলমের বিদায়ের পর থেকে আবার ও শুরু হয় বাল্য বিবাহের রঙ্গ মঞ্চ। এক সমীক্ষায় দেখা যায়, গরীব পিতার পঞ্চম শ্রেনীতে পড়ুয়া থেকে অষ্ঠম শ্রেনীতে পড়ুয়া নাবালিকা কন্যাকে নিজ গ্রাম থেকে দুরে অন্য কোন গ্রামে গিয়ে গভীর জঙ্গল মাঝে নাবালক/নাবালিকাদের সিঁথীতে রক্ত রাঙ্গা সিঁদুর ও মালা বদলের মাধ্যমে বিবাহ আবদ্ধ করা হচ্ছে। এ যেন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করার একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কঠোর হস্তক্ষেপ গ্রহন করা সত্বে ও আনাচে কানাচে, বনজঙ্গল, পানের বরাজে ও বাঁশ বাগানে এমন কি নৌকা যোগে বিশাল বিলের মাঝ খানে গিয়ে পাত্র পাত্রীর আত্মীয় স্বজনের সহযোগীতায় মধুর মিলন (বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ ) করানো হয়।
নাবালক/নাবালিকাদের বাল্য বিবাহ দিয়ে দেশ জাতি ও সমাজের ক্ষতি সাধন করছে এক শ্রেনীর কুচক্রী অভিজ্ঞ মহল এযেন শুভঙ্করের চরম ফাঁকি। এই ফাঁকি দিতে গিয়ে তাঁদের কাঁধে তুলে দিচ্ছে বাঁশের বোঝা। আর এরই ফলে মাতৃ মৃত্যু ও শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে অহরহ।
খুলনা জেলার তেরখাদা প্রেসক্লাবের সভাপতি উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক দৈনিক পূর্বাঞ্চল, জাতীয় দৈনিক ইত্তেফাক ও NEWS 24 চ্যানেলের তেরখাদা প্রতিনিধি সাংবাদিক মফিজুল ইসলাম জুম্মার নেতৃত্বে একটি টিম গোপনে বিভিন্ন উপজেলার গ্রামে গ্রামে সরেজমিন তদন্ত দেখেন যে স্কুল পড়ুয়া নাবালিকার পরিজন নাবালিকা কন্যা কে পাশের কোন উপজেলার কোন এক আত্মীয়ের বাড়ীতে অবস্থান করে রাতের অন্ধকারে বাল্য বিবাহ দিয়ে অন্য কোন গ্রামে গিয়ে অবস্থান করছে।
এছাড়াও তদন্তের মাধ্যমে আরো দেখা যায়, তেরখাদা উপজেলা, রূপসা উপজেলা সহ বাগেরহাটের জেলার মোল্লাহাট উপজেলা, ফকির হাট উপজেলা ছাড়াও নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে গরীব পিতা মাতার অবয়স্ক প্রাপ্ত কন্যা কে বাল্য বিবাহে আবদ্ধ করানো হচ্ছে। যা দণ্ডনীয় অপরাধ। প্রসাশনের চোখে ধুলো দিয়ে সম্প্রতি আবারও তেরখাদা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে বাল্য বিবাহের প্রবণতা বেড়েই চলছে। তদন্তে আরো দেখা যায়, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে বাল্য বিবাহের স্থান হলো মন্দির, জঙ্গল অথবা জন শুন্য স্থান নৌকা করে বিলের মাঝ খানে।
তাছাড়া বিবাহ স্থান হলো এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলা যেমন তেরখাদা থেকে কালিয়া, তেরখাদা থেকে রূপসা, মোল্লাহাট ও ফকির হাট উপজেলা। জনসাধারণের ধারণ যে বাল্য বিবাহ সংঘটিত পরবর্তী সময়ে প্রশাসনের কঠোর হস্ত ক্ষেপে নাবালক-নাবালিকা সহ তার অভিভাবকদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা।
সকলের মতে, কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এই বাল্য বিবাহের অপরাধ প্রবণতা সমাজ থেকে দুর হবে বলে জনসাধারণের ধারণা আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা। কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এই বাল্য বিবাহের অপরাধ প্রবণতা সমাজ থেকে দূর হবে বলে জনসাধারণের ধারণা।