যুক্তরাষ্ট্র থেকে হাকিকুল ইসলাম খোকন : গত বৃহস্পতিবার, ৩০ মে, ২০২৪ইং তারিখে নিউইয়র্কের এক আদালত সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করেছে। ওই মামলায় আনা ৩৪টি অভিযোগের সব ক’টিতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন রিপাবলিকান দলের এই নেতা। তিনিই আমেরিকার ইতিহাসে প্রথম কোনো সাবেক প্রেসিডেন্ট যাকে ফৌজদারি মামলায় বিচার এবং দোষী সাব্যস্ত করা হল।
১২ সদস্যর জুরি ট্রাম্পকে ২০১৬ সালের নির্বাচন বেআইনিভাবে প্রভাবিত করার লক্ষে তার ব্যবসায়িক রেকর্ড জালিয়াতি করার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেন। এই প্রক্রিয়ায় একজন পর্ন তারকার মুখ বন্ধ রাখার জন্য ঘুষ দেয়া হয়েছিলো।
এছাড়াও জানা গেছে, আগামী ১১ জুলাই এ মামলায় ট্রাম্পের সাজা ঘোষণা করা হবে, এমনকি সাবেক এ প্রেসিডেন্টের কারাদণ্ডও হতে পারে। তবে আইনজ্ঞরা বলছেন, তাঁকে জরিমানা করার সম্ভাবনাই বেশি।
৭৭ বছর বয়সী ট্রাম্পের বিরুদ্ধে করা মামলাটির অভিযোগে বলা হয়, ২০০৬ সালে স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে তাঁর যৌন সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। পরে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে এ বিষয়ে মুখ না খুলতে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে স্টর্মিকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার ঘুষ দেওয়া হয়। তাঁর হাতে এ অর্থ তুলে দিয়েছিলেন ট্রাম্পের আইনজীবী মাইকেল কোহেন। তবে ব্যবসায়িক নথিপত্রে এ লেনদেনের তথ্য গোপন করা হয়েছিল। যদিও এসব অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে এসেছেন ট্রাম্প।
নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে দীর্ঘ পাঁচ সপ্তাহ ধরে শুনানির পর গত বৃহস্পতিবার এ রায় ঘোষণা করেন ১২ জন বিচারকের একটি বেঞ্চ। এর আগে তাঁরা রায় নিয়ে ১১ ঘণ্টা আলাপ-আলোচনা করেছেন।
উল্লেখ্য যে এমন সময় এ রায় ঘোষণা করা হলো, যখন কয়েক মাস বাদেই যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ওদিকে এ নির্বাচনেও অংশ নিয়ে আবার প্রেসিডেন্ট পদে আসতে চাচ্ছেন ট্রাম্প। তবে এ রায়ের কারণে তাঁর নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় কোনো বাধা আসবে না।
এদিকে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ডোনাল্ড ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছেন, “এটি অপমানজনক। এটি একটা সাজানো মামলা, যেটি পরিচালনা করেছেন একজন দুর্নীতিবাজ বিচারক।”
রায় ঘোষণার পর আদালত কক্ষ থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের ট্রাম্প এছাড়াও বলেন যে এটা তাঁর জন্য মর্যাদাহানিকর। তিনি ন্যায়বিচার পাননি। আদালতের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তিনি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করে যাবেন।