নিজস্ব প্রতিবেদক : দোকান থেকে উচ্ছেদবাদ সবকিছু আত্মসাৎ করার ঘৃণ্য পরিকল্পনায় এক কলেজ ছাত্রীকে আটকিয়ে তার কাছ থেকে জোর পূর্বক অনৈতিক কাজের স্বীকারোক্তি আদায়ের অপচেষ্টাসহ বিভিন্ন রকম ভয়ভীতি, হুমকি ধামকিসহ মারধর করে, ব্যাগের টাকা-পয়সা সবকিছু লুটে নেবার পর জোর করে একশো টাকার স্ট্যাম্প পেপারে (সাদা) সই করিয়ে তিনদিনের মধ্যে দোকান ছেড়ে চলে যাবার আল্টিমেটাম দিলেন সন্ত্রাসী মেম্বার তার বাহিনী নিয়ে। উল্লেখিত ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী থানাধীন ১নং কালির বাজার ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত ৪মে রোজ শনিবার বেলা আনুমানিক এগারোটার দিকে কুমিল্লা জেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের বাংলাদেশ আর্মি ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় মার্কেটের (বায়োয়েষ্ট) বি.ওয়ান বার্গার নামক ফাষ্টফুডের দোকান মালিক সোহেল তার প্রতিষ্ঠানটি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করছিলেন এমন সময় বন্ধ সাটারের উপর বাইরে থেকে আঘাতের পর আঘাতের শব্দ শুনে সাটার খুললে দেখতে পায় কিছু উঠতি বয়সের যুবকদের। সে তাদের পরিচয় ও আসার কারণ জিজ্ঞাসা করলে তারা তার কোনো কথার জবাব না দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগালি শুরু করে দেয় এবং জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যায়। এমতাবস্থায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় পরিস্থিতিতে সোহেল কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখতে পায় গলির মুখে আরোও কয়েকজন মিলে একটি মেয়েকে আটকে রেখেছে। সোহেল মেয়েটাকে দেখে চিনতে পারে কারণ ওই মেয়েটা কিছুক্ষণ আগেই তার দোকানে এসে বিশ্ববিদ্যালয় কবে খুলবে এবিষয়ে তার কাছে জানতে চাওয়াসহ কয়েক মিনিট কথা বলে চলে গিয়েছিল। সে জানায় তার নাম আনিকা সে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী।
এরপর তারা সোহেল ও আনিকাকে একসাথে বসিয়ে বিভিন্ন রকম আজেবাজে প্রশ্ন করতে থাকে এবং তাদের দুজনার কাছ থেকে এই মর্মে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায়ের অপচেষ্টা করে যে তারা দুজন অনৈতিক কাজ করেছে কিন্তু তারা এই ঢাহা মিথ্যা কথাটি কিছুতেই স্বীকার করেন না। এমন সময় ওখানে এসে হাজির হয় উক্ত এলাকার কামরুজ্জামান মেম্বার।
আমাদের অনুসন্ধানী প্রতিবেদকের দল এবিষয়ে সোহেল এবং আনিকার সাথে কথা বলে জানতে পারে, কামরুজ্জামান মেম্বার ওখানে পৌঁছেই সোহেলকে গালাগালি শুরু করে এবং কবে দোকান ছেড়ে চলে যাবে এই প্রশ্ন করে কিন্তু সোহেল অহেতুক কেনো তার দোকান ছেড়ে দিবে এই প্রশ্ন করলে তারা উপর্যপরি মারধর করতে থাকে এবং একটি একশো টাকার স্ট্যাম্প পেপারে (সাদা) সই করতে বাধ্য করে। এখানেই শেষ নয়, তারা এসব ভিডিও করে তা যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দেয়। পরবর্তীতে তিনদিনের মধ্যে দোকান ছেড়ে পালিয়ে যাবার হুকুম দিয়ে ছেড়ে দেয়। বর্তমানে সোহেল ওই সন্ত্রাসী বাহিনীর ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন এবং মান ইজ্জত হারা আনিকা আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভুক্তভোগী সোহেল এবিষয়ে স্থানীয় থানায় গিয়ে যে অভিযোগ করবে তাও করতে পারছে না, ওদিকে সে খবর পেয়েছে যে তার দোকানের অনেক মালপত্র লুটপাট হয়ে গেছে।
এদিকে অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে এই নেককারজনক ঘটনাটি মূলত সোহেলের দোকানটি আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যেই ঘটানো হয়েছে। জানা যায় সোহেল অনেক চেষ্টা তদবির ও শ্রমের বিনিময়ে ওই ফাষ্টফুডের দোকানটি সুপ্রতিষ্ঠিত করেন যা বর্তমানে একটি লাভজনক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এসে দাঁড়িয়েছে, তাই দেখে জমির মালিক আবদুল হালিম মাষ্টার সাহেব লোভের বশবর্তী হয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই তাকে দোকান ছেড়ে চলে যেতে বলছেন কিন্তু সোহেল তার কষ্টে প্রতিষ্ঠিত দোকান ছাড়তে নারাজ বলে বিভিন্ন রকম হুমকি ধামকির সাথে সাথে বিদ্যুতের মিটার নিয়েও গড়বড় শুরু করেন কিন্তু তবুও সোহেল দোকান না ছাড়ায় মালিক কামরুজ্জামান মেম্বার ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে এই ঘটনাটি ঘটায়। অনুসন্ধানে মিলেছে কামরুজ্জামান মেম্বারের এই অপকর্মের সাথে যারা ছিলেন তাদের মধ্যে কাউসার, প্রকাশ, জামাল, হৃদয়, কামরুল হাসান আসিফ, জয়নাল বাবুর্চিরা ছিলেন অন্যতম।
হয়রানি ও ইজ্জত হরণের জন্য ফেসবুকে ছেড়ে দেয় ভিডিও: