ভিডিও করে ফেইসবুকে ছেড়ে দেয়

দিনাজপুর প্রতিনিধি : ‘দিনাজপুর আর চাল যেনো দুজনে দুজনার’। নানা ধরনের সুগন্ধি চাল উৎপাদনের জন্য দিনাজপুরের নাম ডাক রয়েছে দেশজুড়েই। এজেলার উৎপাদিত ধান-চাল দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজার জাত হয়ে থাকে।

তবে এবার এই জেলায় ধান থেকে নয়, বাঁশের ফুল থেকে হচ্ছে চাল উৎপাদন! খেতেও সুস্বাদু। জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার ১নং এলুয়াড়ী ইউনিয়নের পাকাপান এলাকার বাসিন্দা সীমল রায়ের ছেলে সাঞ্জু রায় বাঁশের ফুল থেকে চাল তৈরি করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। সে ৪০ টাকা কেজি দরে তা বিক্রিও করছেন যা মানুষ কিনে নিচ্ছেন লাইন দিয়ে কিন্তু তুলনামূলক কম উৎপাদন আর চাহিদা বেশি থাকায় গ্রাহকদের চাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন সাঞ্জু রায়।

জানা যায় ধান থেকে উৎপাদিত চালের মতো হুবহু এই বাঁশ ফুলের চাল। ভাত, পোলাও, আটা কিংবা পায়েস সব কিছু তৈরি হচ্ছে এই বাঁশ ফুলের চাল থেকে।

কথা হোলো সাঞ্জু রায়ের সাথে, তিনি জানান, স্থানীয় এক বৃদ্ধের কাছ থেকে বাঁশের ফুল থেকে চাল উৎপাদনের ধারণাটা তিনি পান। এছাড়াও তিনি জানতে পেরেছেন যে যুদ্ধের সময় যখন চাল কিংবা ভাত অপ্রতুল ছিল তখন স্থানীয়রা এই বাঁশের ফুল থেকে চাল উৎপাদন করে রান্না করে খেতেন। সম্প্রতি ওই বৃদ্ধ সাঞ্জু রায়ের এলাকায় বাঁশ ফুল দেখে চাল উৎপাদন করার কথা তাকে বললে পরে তিনি চাল উৎপাদন করার পরিকল্পনা করেন।

দিনাজপুরে মিলেছে বাঁশের ফুল থেকে ভাতের চালের সন্ধান!
(ছবি: সংগৃহীত)

সাঞ্জু জানান, প্রথমে তিনি বাঁশের ফুলগুলো বাঁশঝাড় থেকে সংগ্রহ করেন। তবে অনেক লম্বা বাঁশের অগ্রভাগ থেকে ফুল সংগ্রহ করাটা বেশ কষ্টকর। অতঃপর সংগ্রহকৃত ফুল পানিতে ধুয়ে পরিষ্কার করে তা রোদে শুকিয়ে ধান ভাঙ্গানোর মেশিনে ধানের মতোই ভাঙানো হয়। ভাঙ্গানোর পর দুই ধরনের চাল মেলে, একধরনের চাল ভাত পোলাওয়ের জন্য অপরটি পায়েশ, পিঠা ইত্যাদির জন্য উত্তম।

স্থানীয়রা জানান, সাঞ্জু রায় বাঁশের ফুল থেকে চাল উৎপাদন করবে এটা তাদের বিশ্বাস হচ্ছিলো না। পরে চাল উৎপাদন করলে কিছুটা অবাক হন তারা। চালের বিনিময়ে চাল কিংবা ৪০ টাকা কেজি দরে কিনে বাঁশ ফুলের চাল কিনে নিয়ে অত্যন্ত সুস্বাদু ভাত, পোলাও, পায়েস ইত্যাদি রান্না করে খেয়ে তারা রীতিমতো অবাকই হয়ে গেছেন।

জানা যায়, বেড়ুয়া বা কাটা বাঁশের ফুল থেকে এসব চাল উৎপাদন করা হচ্ছে। তবে বাঁশের বয়স ৬০ থেকে ৭০ বছর হতে হয়, অর্থাৎ অনেক বয়স হবার পরে এজাতীয় বাঁশে ফুল ধরে এবং ফুল হবার পরে বাঁশগুলো প্রকৃতির ভাবেই মারা যাবে বলেও স্থানীয়রা জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *