IMG 20240421 WA0017

নবীনগর ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে বিপ্লব নিয়োগী তন্ময় : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় বাদশা মিয়া (১৭) নামের এক যুবককে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।এক স্কুল ছাত্রীকে উত্যক্ত করার জের ধরে উত্যক্তকারীদের হামলায় এ খুনের ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে ইভটিজিংয়ের জের ধরে যুবককে কুপিয়ে খুন
(ছবি: সংগৃহীত)

ইভটিজিংয়ের এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষে এছাড়াও আরও চারজন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে দু’জনকে মুমুর্ষু অবস্থায় ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। পুলিশ এ হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ইতিমধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ বিষয়ে ২১ জনের নাম উল্লেখ করে নিহতের বোন পপি আক্তার বাদী হয়ে নবীনগর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। গতকাল শনিবার রাতে এ নির্মম হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটে।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) সিরাজুল ইসলাম আজ রবিবার (২১ এপ্রিল) সকালে এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ, এলাকাবাসী ও মামলার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সলিমগঞ্জ ইউনিয়নের বাড্ডা গ্রামের পশ্চিম পাড়ায় আবু কালাম মিয়ার (চট্টগ্রামের মাছ ব্যবসায়ী) পাশ্ববর্তী বাড়িতে ঢাকা থেকে ১৫/১৬ বছরের একটি মেয়ে সম্প্রতি বেড়াতে আসে।

এলাকাবাসী জানান, শনিবার মেয়েটি গ্রামের বাজারে যাওয়ার পথে পাড়ার অনিকের নেতৃত্বে কয়েকজন উশৃঙ্খল যুবক মেয়েটিকে নানাভাবে উত্যক্ত করে। সেসময় আবু কালাম মিয়ার পুত্র বাদশা মিয়া (১৭) জোরালো ভাবে উত্যক্তের (ইভটিজিং) প্রতিবাদ করে। এ নিয়ে উশৃঙ্খল যুবকদের সাথে বাদশার কথাকাটাকাটি ও ঝগড়া হয়। এর জের ধরেই অনিকের নেতৃত্বে ওই যুবকেরা দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে শনিবার রাতে বাদশার বাড়িতে গিয়ে সশস্ত্র হামলা চালায়। হামলাকারীরা এ সময় বাড়ির উঠোনে সকলের সামনে বাদশাকে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। হামলার সময় বাদশাকে বাঁচাতে এসে তারেক, মাইনুদ্দিন, সাইফুল ও জিহাদ গুরুতর আহত হয়। এরমধ্যে আহত সাইফুল ও জিহাদকে মুমুর্ষু অবস্থায় ঢাকায় প্রেরণ করা হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে ইভটিজিংয়ের জের ধরে যুবককে কুপিয়ে খুন
(ছবি: সংগৃহীত)

এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চট্টগ্রামের ব্যসায়ী কালামের ছেলে বাদশার উপর এ বর্বরোচিত হামলা করে গ্রামেরই মোশারফ মাস্টারের গোষ্ঠীর কিছু বখাটে যুবক। ঘটনার পর পুলিশ মোশারফ মাস্টারকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাতেই নবীনগর থানায় নিয়ে আসে। তবে থানায় সারারাত জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ভোরে তাকে (মোশারফ) ছেড়ে দেয়া হয়।

পরে অনিককে ১ নম্বর আসামি করে মোট ২১ জনের নাম উল্লেখপূর্বক থানায় একটি মামলা দায়ের করা হলে পুলিশ এ ঘটনায় এ পর্যন্ত রাসেল মিয়া (৩২), ইউনুস মিয়া (৩৫), শাকিল আহমেদ (১৯) ও মাসুদ মিয়া (২০) নামে এজহার নামীয় চারজনকে গ্রেপ্তার করে।

এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) সিরাজুল ইসলাম, নবীনগর থানার ওসি মাহবুব আলম, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সজল কান্তি কাশ ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।

পুরো ঘটনার বর্ণনা দিয়ে এডিশনাল এসপি সিরাজুল ইসলাম আজ সকালে বলেন,’একটি মেয়েকে উত্যক্ত করার জের ধরেই বাদশাকে নির্মমভাবে বাড়ির উঠোনে কুপিয়ে খুন করা হয়। এ ঘটনায় ২১ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। পুলিশ ইতিমধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। বাকীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশের এই উর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, ‘আইনশৃংখলা রক্ষায় এলাকায় পুলিশী টহল বাড়ানো হয়েছে। ইতিমধ্যে লাশ উদ্ধার করে জেলা মর্গে আজ (রবিবার) সকালে পাঠানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *