বিশেষ প্রতিবেদন :নীরব খান ওরফে রবিন বয়স ৩৮। সে তার স্ত্রী হাবিবা এবং তিন মেয়েকে নিয়ে ব্লগিং করেন এর পাশাপাশি নিরব বিভিন্ন কিশোরীদের ব্লগের নামে ফাঁসানো এবং ব্ল্যাকমেইল করাকেই তার পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠে এসেছে। জানা যায়, এসব বিষয়ে তার স্ত্রী তাকে সবচেয়ে বেশী সহযোগিতা করেন।
সুত্র থেকে জানা যায়, তারা নানা পরিচয়ে কখনো দেবর- ভাবি কিংবা কখনো ভাই-বোন সেজে মানুষের সাথে প্রথমে পরিচিত হন পরে প্রতারণা করেন। এরা বিশেষ করে নিজেদের মেয়ের বয়সী কিশোরীদেরকে টার্গেট করেন, পরে ব্লগ এবং টিকটিক করে অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদেরকে নানা কৌশলে ফাঁসিয়ে ব্ল্যাক মেইল করেন।
অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, গেলো ঈদের তৃতীয় দিনের দিন এই দম্পতি জিঞ্জিরা থেকে ১৩ বছরের এক মেয়েকে বেড়াতে নিয়ে যাবার ছলে এভাবেই ফাঁদে ফেলেন। পরে ওই কিশোরী রাতে বাসায় না ফিরলে তার বাবা স্থানীয় লোকজন নিয়ে উল্লেখিত হাবিবার বাসায় খোঁজ করতে গেলে ওই নারী সবাইকে উল্টো ডাকাতি মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার হুমকি ধামকি দেন কিন্তু পরবর্তীতে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হবার পরে হাবিবা বেগতিক দেখে পালিয়ে যাবার উপক্রম করে। এমতাবস্থায় সেখানে স্থানীয় থানা থেকে পুলিশ এসে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে উত্তেজিত জনতাকে আশ্বস্ত করে যে হাবিবা পালাবে না। তবে সরেজমিনে খবর নিয়ে জানা যায়, সবার চোখে ধুলো দিয়ে বিকেলেই হাবিবা তার তিন কন্যাসহ মেঘনা উপজেলায় তার বাবার বাড়িতে পালিয়ে যান। এদিকে মেয়েটির বাবা জানান, নীরব ওরফে রবিন এরই মধ্যে তাকে কয়েকবার মুঠো ফোনে কল করেন এবং তার মেয়েকে মেরে ফেলার হুমকি দিতেও পিছপা হন না।
এদিকে এই ঘটনা নিয়ে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় একটা অভিযোগ করা হয় এবং থানা পুলিশের সহায়তায় ৫দিন পর ওই মেয়েকে রাত ১২টার দিকে ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্ক থেকে উদ্ধার হয়।
ওদিকে হাবিবার বাবার বাড়ি মেঘনা উপজেলায় গিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার অভিযান চালানোর সময় উক্ত স্থানীয় মেম্বার জানান, নিরব নামক লোকটা এর আগে তার নিজ শ্যালিকাকেও একবার এভাবে ফাঁদে ফেলেছিলো কিন্তু পারিবারিক সম্মানহানির কথা বিবেচনা করে ঘটনাটিকে ধামাচাপা দিয়ে পরে পারিবারিক ভাবে একটা সুরাহা করা হয়।
এ নেককারজনক ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শী মোঃ মাসুদ বলেন, “অপহরণের ৪ দিন পরে রাত ১২টা নাগাদ প্রশাসনের অভিযান টের পেয়ে মেয়েটিকে ভিক্টোরিয়া পার্কে রেখে সরে পড়ে নীরব। ওই অপ্রাপ্ত বয়সী কিশোরী মেয়েটিকে উদ্ধারের কাজে আমি নিজেও সহায়তা করেছিলাম। নীরব এবং হাবিবা এখনো বিভিন্ন মোবাইল নাম্বার এবং অ্যাপস দিয়ে কল দিয়ে আমাকে এবং মেয়েটার বাবাকে বিভিন্ন রকম ভয়ভীতিসহ হুমকি ধামকি দিয়ে যাচ্ছেন। এই বিষয়ে র্যাবের কাছে একটি অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে। র্যাব ধারণা করছে এরা একটি শিশু ও নারী পাচারকারী দলের সদস্য। কোমলপ্রাণ শিশু ও অপ্রাপ্ত বয়সী কিশোরীরাই এদের টার্গেট। টিকটিক, রিল, ব্লগ এসবের আড়ালে আসলে এরা আশেপাশের মানুষের সাথে ঘনিষ্ঠ হয়। পরবর্তীতে তাদেরকে নানা ধরনের অসামাজিক অপকর্মতে লিপ্ত করে এবং ব্ল্যাকমেইল করে থাকে।”